ওঝার ঝাড়-ফুঁকে ৫ম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মার্চ ২০১৯, ৪:৫৯ অপরাহ্ণকিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ওঝার ঝাড়-ফুঁকের পর পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রের নাম মো. হানিফ (১০)।
জানা গেছে, বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর ২টায় জমিতে হানিফ ঘাস কেটে বাড়িতে ফেরার পর হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এলাকাবাসী ও স্থানীয় রশিদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহায়তায় হানিফকে একই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেনের কাছে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে হাসাপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু চেয়ারম্যান ও হানিফের স্বজনরা বাড়ির পাশের ওঝা চান মিয়া মুন্সীর কাছে নিয়ে যায়।
ওঝা চান মিয়া রোগীকে দেখে সাপে কেটেছে বলে স্বজনদের জানালে এরপর শুরু হয় ঝাড়-ফুঁক। ওঝা প্রথমে রোগীকে বাড়ির ওঠানে বসিয়ে গামছা ভিজিয়ে দঁড়ির মতো তৈরি করে দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এক নাগারে আঘাত করতে থাকেন। এ ছাড়া তুলা রাশি দিয়ে শিশু হানিফের হাত চালান দেওয়া হয়।
এসবে কাজ না হওয়ায় সন্ধ্যা ৬টার পর ওই ওঝা জানান, রোগী আর ভালো হবে না, সে মৃত। পরে ওঝা জানান, হানিফকে সাপে কাটেনি, ভর দুপুরে বাড়ির বাইরে যাওয়ায় জ্বীনের আঁচড় পড়েছে।
ওঝা মৃত ঘোষণা করার পরপরই শিশু হানিফের লাশ দাফন করার প্রস্তুতি নেয় স্বজনরা। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে সন্ধ্যার পর কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ উপস্থিত হয়ে শিশু হানিফের লাশ কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
এ ঘটনায় হানিফের বাবা ও ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া জানান, এলাকার ওঝা চান মিয়া খুব অভিজ্ঞ। দীর্ঘদিন ধরে সাপে কাটা রোগীসহ আরও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা করে আসছেন।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘সন্ধ্যার পর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে আমি পুলিশ পাঠিয়ে মৃত হানিফের লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। রিপোর্ট অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’