বিয়ানীবাজারে চিনি ছিনতাই: ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাহমিদ জেলহাজতে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুন ২০২৪, ২:৪২ অপরাহ্ণস্টাফ রিপোর্টার: বিয়ানীবাজারে আলোচিত ট্রাকভর্তি ৪শ’ বস্তা চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সন্দেহভাজন আরো একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১৬ জুন) ভোর সাড়ে ৫ টায় পৌর এলাকার নিদনপুরের নিজবাড়ি থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক তাহমিদকে (২৬) আটক করা হয়। সে নুরুল হকের ছেলে ও পল্লব গ্রুপের একনিষ্ঠ কর্মী।
আজ দুপুরে ধৃত ছাত্রলীগ নেতা তাহমিদকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
গত বৃহস্পতিবার চিনিকাণ্ড নিয়ে তাহমিদ ও সাগরের ফোনালাপ ফাস হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ শুক্রবার বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর বলেন, চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জাহিদুল হক তাহমিদকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনার প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের জন্য ধৃত তাহমিদের বিরুদ্ধে আদালতে রিমাণ্ড আবেদন করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চিনি ছিনতাই ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের নাম বেরিয়ে আসবে, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওসি দেবদুলাল ধর।
তিনি আরও বলেন, অবশিষ্ট ৩২০ বস্তা চিনি উদ্ধার এবং এজাহারভুক্ত অপর আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।

চিনিকাণ্ডে ধৃত দুই আসামী
এদিকে, এ ঘটনায় গত সোমবার ৮০ বস্তা চিনি ও একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার এবং গত মঙ্গলবার এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতরা হলো, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসাইনপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে মো. লিটন মিয়া (২৬)। সে বর্তমানে বিয়ানীবাজার পৌরসভার দাসগ্রামের লিচুটিলাস্থ ছাত্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে। অন্য আরেক আসামী হাসান (২১)। সে বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বোবারগুল এলাকার মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুন শনিবার ভোরে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের বিয়ানীবাজার অংশের চারখাই লালপুর এলাকায় সরকারি নিলাম থেকে কেনা বদরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর ২৪ লাখ টাকার ৪শ’ বস্তা চিনি ও চিনি বহনকারী একটি ট্রাক অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত। ঘৃণিত এ কাণ্ডে দেশ বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ঘটনার সাথে জড়িত ১১ জনের নামোল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামী করা হয়।
এ মামলার আসামীরা হলো, ছোটদেশ ছুটিয়াংয়ের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী), খাসাড়িপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল আহমদ (২৪, ছাত্রলীগ কর্মী), শ্রীধরার মুজিবুর রহমানের ছেলে বক্কর (২৫, স্যানেটারী মিস্ত্রী), একই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে আনু (২৩, দিনমজুর) ও আজির উদ্দিনের ছেলে ছাদিক আহমদ (৩০, সবজি ব্যবসায়ী), কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসাইনপুর গ্রামের (বর্তমানে পৌরশহরের দাসগ্রাম লিচুটিলা ছাত্তার মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া) মো: খলিল মিয়ার ছেলে মো: লিটন মিয়া (বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা শাহবাজপুর এলাকার বোবারতল গ্রামের (বর্তমানে সুপাতলা) মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১, বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), নবাং গ্রামের শরফ উদ্দিনের ছেলে জিবান (২২, বখাটে ছাত্রলীগ কর্মী), চট্রগামের বাসিন্দা বর্তমানে সুপাতলার নছরুল্লাহর ছেলে সাগর (২৮, উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ সভাপতি), খাসাড়িপাড়া গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে ফাহাদ আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী) ও চারখাই জালালনগরের হেলাল মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (২৪, মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী)।