সিলেট-৬: ভোটের রঙ্গমঞ্চে চলছে হরেক খোশগল্প!

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ৪:৩৪ অপরাহ্ণস্টাফ রিপোর্টার: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ৮ দিন। এরপরই কে হবেন জনপ্রতিনিধি; টানা ৮ ঘন্টার ভোটে তা নির্ধারণ করা হবে। জয়ী হতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী ৬ প্রার্থীর মধ্যে অন্তত তিনজন। চা-স্টল থেকে শুরু করে সর্বত্র চলছে প্রত্যাবর্তন না পরিবর্তন এর খোশগল্প। প্রত্যেকেই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে এগিয়ে রাখতে ভুল করছেন না।
সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিদ্যমান রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ৬ প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনে অভিযোগ উঠেনি। এ কারণে প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশে সুন্দর পরিবেশ দেখতে চায় সাধারণ জনগণ ও ভোটার। নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, হবে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা। তবে, কোন অবস্থাতেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কিংবা উন্মাদনা ছড়ানোর মতো বক্তব্য শুনতে চায় না জনগণ। এরপরও এ পন্থা যে অবলম্বন করবে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এককথায় যাকে ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে’ কিংবা ‘পাকা ধানে মই’ হিসেবে মন্তব্য করা হয়।
ক্লিন ইমেজের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত নুরুল ইসলাম নাহিদ। ইতিমধ্যে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য, চারবার সংসদ সদস্য ও দু’বার শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এবারও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন। দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রাজ্ঞ এ রাজনীতিক ভোটের মাঠে দলবল নিয়ে কাজ করছেন।
এ সময়ে ভোটারদের অভাবনীয় সাড়া পেলেও ক্ষেত্রবিশেষ হচ্ছেন হতাশ। তা কাটিয়ে উঠারও চেষ্টা করছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। তাতে সঙ্গ দিচ্ছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান। ইতিমধ্যে দু’জনে বেশ কয়েকটি পথসভা করেছেন। তাতে সরকারের উন্নয়ন ও আগামী পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। সভাগুলো একপর্যায়ে জনসভায় রূপ নিয়েছে বলে দলের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন।
তাদের মতে, আওয়ামী লীগের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। আছে বিশাল কর্মীবাহিনী। এজন্য উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে ভোটাররা আবারও নৌকায় ভোট দিবে। সময় বাড়ার সাথে সাথে ভোটের অংক বাড়ছে বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।
নির্বাচনী মাঠে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তৃণমূল বিএনপি’র প্রার্থী শমসের মুবিন চৌধুরী। সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও ভোটের মাঠে তাঁকে নিয়ে রহস্য কাটছে না। নৌকা কিংবা ঈগল সমর্থকদের কাছে আলোচনায় ঘুরেফিরে হাজির হচ্ছেন শমসের মুবিন চৌধুরী। তিনি নতুন রাজনৈতিক দলের চেয়ারপার্সন হলেও একজন জাঁদরেল কূটনীতিক হিসেবে দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ভোটের অংকে তাঁর কূটনৈতিক চাল শেষ পর্যন্ত কাজে লাগবে কি-না এখন তা দেখার উপজীব্য বিষয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সোনালী আঁশ এর প্রচারণায় গতি পেয়েছে। দু’উপজেলায় মাইকিং করার পাশাপাশি গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরী। এতেও তিনি গতানুগতিক সভার চেয়ে কূটনীতিকে কাজে লাগাচ্ছেন বেশি। আঞ্চলিক ইস্যু কাজে লাগিয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার আলামত ধীরে ধীরে জনসমক্ষে স্পষ্ট হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তা লোকালয়ে দেখা যাবে বলেও শমসের মুবিন অনুসারী ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে।
সুষ্ঠু ভোট হলে সফলতা তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে বলেও গণমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন শমসের মুবিন চৌধুরী।
কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন। ঈগল প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি জেল খেটেছেন। দলের নিবেদিত কর্মী হিসেবে গণভবনে যার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দু’উপজেলায় ৪০ কোটি টাকার বেশি অনুদান এনে দিয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এজন্য তিনি ভোটের মাঠে আলোচনায় রয়েছেন।
তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আব্দুল বারী। মাঠের পুড়খাওয়া এ নেতা নির্বাচনের ‘পলিসি মেকার’ হিসেবেও পরিচিত। ঈগলের প্রচারণা তুঙ্গে উঠলে সম্প্রতি এ শিবিবে প্রকাশ্যে যোগ দিয়েছেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ছরওয়ার আহমদ। ইতিমধ্যে গুটিকয়েক সভায় তাদের দেয়া বক্তব্য রীতিমতো উত্তাপ ছড়াচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ঘায়েল করার কৌশল অবলম্বন করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও বেশ সরগরম। তাতে জমে উঠেছে ভোটের মাঠ।
ঈগল সমর্থকরা জানান, তারা এ মুহূর্তে জয় ছাড়া কিছু ভাবছেন না।