স্বতন্ত্ররা বিরোধী দল হতে পারবে!
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ২:০৯ অপরাহ্ণসারা দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বড় অংশই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরেই, অর্থাৎ দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে জয় পেতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সে ক্ষেত্রে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হতে পারেন বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এমন অবস্থায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে জয়ী হলে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা আগামী সংসদে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা সংখ্যায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হলেও সরাসরি প্রধান বিরোধী দল হতে পারবে না। তবে তারা সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্য দলকে সমর্থন করে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রথা অনুযায়ী সংসদে বিরোধী দল হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের বিরোধী দল হওয়ার ব্যাপারে সংবিধানে সুস্পষ্ট কিছু বলা নেই। সংবিধান ও আইনের বিধিবিধান দেখে এ বিষয়ে পরবর্তী সময় বিস্তারিত বলা যাবে।’
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘স্বতন্ত্র হলেও বিজয়ের পর তাদের প্রধান পরিচয় হবে তারা নির্বাচিত সংসদ সদস্য। যেহেতু বিরোধী দল হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থাকতে হয়, সে ক্ষেত্রে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা নিজেদের মধ্যে জোট করতে পারবেন। সেই জোট সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী যেকোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারবে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের গঠিত জোটের সমর্থনে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে কোনো বাধা নেই। শুধু তাই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি অধিকাংশ আসনে জয়ী হন, তাহলে একই প্রক্রিয়ায় তারা সরকারও গঠন করতে পারবেন। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা সংখ্যায় বেশি হলে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী যেকোনো দলের সঙ্গে ঐক্য করে একজনকে সংসদ নেতা নির্বাচন এবং মন্ত্রিসভাও গঠন করতে পারবেন। এতে সাংবিধানিক কোনো বাধা নেই।’
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘সরাসরি প্রধান বিরোধী দল হওয়ার জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হওয়া প্রয়োজন। ছোট ছোট দলের মোর্চা গঠন করেও বিরোধী দল হওয়া সম্ভব। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেলেও প্রধান বিরোধী দল হওয়ার জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী কোনো দলকে সমর্থন করে স্পিকারের কাছে আবেদন করতে হবে। এভাবে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে পারবেন।’
সিনিয়র আইনজীবী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান জেড আই খান পান্না বলেন, ‘স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেলেও নিজেরা সরাসরি প্রধান বিরোধী দল হতে পারবে না। তবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ও সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী কোনো দলকে সমর্থন দিয়ে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারবেন।’
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, এবারের সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ভোটযুদ্ধে মাঠে নেমেছেন মোট ১ হাজার ৮৯৫ প্রার্থী। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩৮২ জন। স্বতন্ত্রদের মধ্যে ১২৭ জন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী। যারা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন ২৬৬ জন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ২৮৩ জন এবং বাকিরা তৃণমূল বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থী। সূত্র: খবরের কাগজ