মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরাফিকে বিএনপির কার্যালয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে।
তাকে আটকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরপরই সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তারের খবর এলো।
মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা তার এই নির্দেশনার কথা জানান।
এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বাইডেনের কথিত উপদেষ্টাকে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সঙ্গে করে নিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, তাকে ছাড়া হবে না। হচ্ছেও না। তার খোঁজ করা হচ্ছে। তাকে ধরা হবে। জিজ্ঞেস করা হবে কেন প্রতারণা করলো। আমি নির্দেশ দিয়েছি। উনি সাজায় গোছায়ে নিয়ে আসছে। তাকে ধরা হবে। ব্যবস্থা নেব। বলে দিয়েছি।
রোববার বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় কথিত মিয়ান আরাফিকে। মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে বিএনপি নেতা মো.ইশরাক হোসেন ও সেনা কর্মকর্তা সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধেও মামলা হয়।
পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কথিত মিয়ান আরাফি জানান, তাকে বাসা থেকে কয়েকটি বিষয় শিখিয়ে পড়িয়ে এনে বিএনপি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
তিনি পুলিশকে জানান, বিএনপির পার্টি অফিসে হাসান সারওয়ার্দী (সাবেক সেনা কর্মকর্তা) বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট বেলাল ও ইশরাক হোসেন তাকে বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। আসলে এটি সত্য নয়। তারা (বিএনপি) মিথ্যাভাবে তাকে উপস্থাপন করেছেন।
শনিবার বিএনপির সমাবেশেকে ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির কার্যালয়ে যাচ্ছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মিয়ান আরাফি নামে এক ব্যক্তি। তাকে সেখানে নিয়ে যান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস জানায়, তাদের কোন প্রতিনিধি দল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যায়নি। কথিত মিয়ান আরাফি নামে তাদের কোন কর্মকর্তা ঢাকায় নেই। খবর মিথ্যা বলেও দাবি করে মার্কিন দূতাবাস। এমনকি বিএনপি এক বিবৃতিতে জানান, কথিত মিয়ান আরাফির বক্তব্যের দায় তারা নিবে না।
২০১৯ সালে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে সেনানিবাসে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়। তার বিভিন্ন আচরণ সেনাবাহিনীর জন্য ‘বিব্রতকর’ বলেও পরের বছর এক বিজ্ঞপ্তি দেয় আইএসপিআর।