সিলেট-৬: প্রার্থী নিয়ে ‘মিনি সংসদ’ সরগরম

কবির আহমদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ৬:৪৯ অপরাহ্ণকবির আহমদ: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে নভেম্বরের মধ্যভাগে তফশীল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতিমধ্যে নির্বাচনী ডামাডোল পুরোদমে শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা হোমওয়ার্ক শেষে উঠান বৈঠক করছেন। প্রার্থীদের নিয়ে গ্রামের মিনি সংসদ খ্যাত চা-স্টলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তাদের কথায় কান দিলেই আপাততঃ মনে হবে; তারা কেবল ভোট নয় নমিনেশন দেওয়ারও মালিক। আরেকটু বাড়িয়ে বললে, কাকে হারিয়ে কাকে জিতানো যায়; এ দায়িত্বও তাদের। আসলেই কী তা-ই!
বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। কিন্তু বিএনপি এবার শেখ হাসিনার অধীনের নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে তারা একদফার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পাত্তা দিচ্ছে না বিএনপিকে। এজন্য তাদের আন্দোলন কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তা এ মুহূর্তে বলা মুশকিল।
গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা নিয়ে সিলেট-৬ সংসদীয় আসন। এ আসনে এবার নির্বাচনী সমীকরণ বেশ জটিল। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। প্রার্থী সিলেকশনে এবার আওয়ামী লীগ একাধিক পন্থা অবলম্বন করছে। শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসলে আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ কৌশল নিবে। আর না এলে একাই পুরনো কৌশলে প্রার্থী নির্বাচন করার আভাস পাওয়া গেছে।
আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে সার্বিকভাবে কাজ করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও দলের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সরওয়ার হোসেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর কাদির সাফি চৌধুরী এলিম, ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী। এছাড়াও আরো কিছু উদীয়মান নেতা দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন।
আন্দোলনে থাকায় বিএনপি এখনো নির্বাচনী মাঠে নামেনি। তবে, কৌশলে তারা ভোটের সরঞ্জাম তৈরি করছে। এলাকায় এলাকায় বিভিন্নভাবে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছে। গত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী। দল নির্বাচনে এলে এবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন, না নতুন মুখের সন্ধান করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। দলীয় মনোনয়ন দৌঁড়ে রয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।
এবার জাতীয় পার্টির চোখ এ আসনের দিকে। ঝুপ বুজে তারাও নির্বাচনী লড়াইয়ে কুপ মারতে চায়। লাঙ্গলের হারানো আসন ফেরাতে তারাও ফন্দি-ফিকির শুরু করেছে। এরই মধ্যে নির্বাচনের জন্য মাঠে রয়েছেন সেলিম উদ্দিন, এডভোকেট এবাদ হোসেন, আতাউর রহমান আতা।
তৃণমূল বিএনপি। নতুন এ দলের সভাপতি হলেন গোলাপগঞ্জের কৃতিসন্তান সাবেক কূটনীতিক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা শমসের মবিন চৌধুরী। জাতীয় রাজনীতির এক অপরিহার্য চরিত্র। জোটবদ্ধ নির্বাচনে আওয়ামী বলয়ে তাঁর গুরুত্ব কম নয়। এ কারণে তিনি নানাভাবে আলোচিত। স্থানীয়ভাবে তাঁকে নিয়ে অনেকের মধ্যে ভয়ও কাজ করছে।
সম্প্রতি বিএনপি নেতা ফয়সল চৌধুরীকে জড়িয়ে এক বক্তব্যের জন্য বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় শমসের মবিন চৌধুরীকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বিএনপি। নির্বাচনী খেলায় এ বিষয়টিও তাঁর জন্য মন্দের ভালো হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
এছাড়া এ আসনে প্রার্থী দিবে ইসলামী দলগুলো। শেষ মুহূর্তে দু’একজন হেভিওয়েট প্রার্থীস্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করারও আভাস পাওয়া গেছে।