৩৫ ভোটে বিজয়!
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ অক্টোবর ২০২২, ১২:০১ পূর্বাহ্ণবিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম: আর মাত্র ০৯ ঘন্টা পর সিলেট জেলা পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের (বিয়ানীবাজার) নির্বাচন। ঐদিন ১৪৬ জন ভোটার সকাল ৯ টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের ৩ জন, পৌর পরিষদের ১৩ জন ও ১০ ইউনিয়ন পরিষদের ১৩ জন করে ১৩০ জন ভোটার।
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ত্রিমুখী এ লড়াইয়ে কমবেশি ৩৫ ভোটে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি ভোট কক্ষ ও কেন্দ্রে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
জেলা পরিষদের নির্বাচনে সদস্য পদে বিয়ানীবাজারে ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সময় যত ঘনিয়ে আসছে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে স্নায়ুচাপ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একজন পর একজন প্রার্থী কিংবা তাদের সমর্থকদের আনাগোনায় ইউপি সদস্যদের পরিবারের বেহাল অবস্থা। নিজ বাড়িতে আগন্তুক অতিথিদের আদর-কদর করতে তারা গোসল কিংবা খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। ভোটার পরিবারের গৃহিনীরা রোববারের রজনী কিভাবে সামাল দিবেন এ নিয়েও অনেকেই চিন্তিত হওয়ার মুখরোচক খবর পাওয়া গেছে।
অনেকের মতে, জেলা পরিষদের এ নির্বাচনে নতুন মুখ যে সদস্য নির্বাচিত হচ্ছেন তা প্রায় নিশ্চিত। বিগত সময়ে বরাদ্দ বন্টনে নামে-বেনামে ক্লাব, সমিতি দেখিয়ে নিজস্ব লোকদের অর্থ লোপাটে সহযোগিতা করার অভিযোগে ভোটাররা এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। তবে, নির্দিষ্ট কোন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া না গেলেও এ ইস্যুতে লাল কার্ড দেখানোর অগ্রিম খবর চারিদিকে বেশ আলোচিত হচ্ছে।
নির্বাচনে দু’একজন ব্যতীত প্রায় সব প্রার্থী বিজয়ের লক্ষ্যে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন উন্নয়নের। প্রয়োজনে আঞ্চলিকতা কিংবা বিশেষ ব্যক্তিদের প্রিয়জন দেখিয়ে ভোট টানার চেষ্টা করছেন। শেষ মুহূর্তে এসে ভোটে বড় বাজাটের আর্থিক লেনদেনেরও জোর গুঞ্জন ওঠেছে। তবে, অনেকেই চারিত্রিক এ দৈন্যতার মধ্যেও পরিশুদ্ধ থাকার চেষ্টা করছেন। এ রকম ভোটারের সংখ্যা কম হলেও অনেকের নাম ঠিকানা আমাদের জানা সম্ভব হয়েছে। তাদের প্রতি প্রার্থীদের ইতিবাচক মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।
এদিকে, নির্বাচনে ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এক প্রার্থীর প্রতি ৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান-মেয়রের সমর্থন থাকার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। হিসেব ঠিকমতো মিললে তিনিই জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ার কথা রয়েছে। আর লোক দেখানো সমর্থন না হলে ভাগ্য বিপর্যয় বলা যেতে পারে।
নির্বাচনে মূল লড়াইয়ে উট পাখি নিয়ে ক্রীড়া সংগঠক ও রাজনীতিবিদ মো. খসরুল হক, মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের পরপর দু’বারের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিহাব উদ্দিন (অটোরিক্সা), বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের খন্ডকালিন প্রভাষক আরবাব হোসেন খান (তালা)। শেষ পর্যন্ত এর মধ্য থেকে একজন ছিটকে পড়বেন। অপর দু’জন থেকে একজনকে ভোটাররা জয়-পরাজয়ের যবনিকাপাত এর ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
তবে, ভোটাররা এ পর্যন্ত কাউকে নিরাশ করার কথা শোনা যায়নি। প্রত্যেক প্রার্থীকে আশ্বাসের ফুলঝুরি দিয়ে বাড়ি থেকে হাসিমুখে বিদায় দিচ্ছেন। এটি প্রার্থীদের প্রতি তাদের ভদ্রতাও বটে।
এছাড়া, আলচনায় চারখাই ইউনিয়ন পরিষদের পরপর দু’বারের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী (হাতী) ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য নজরুল হোসেন (ফ্যান)। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন বিয়ানীবাজার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল কাদির (ক্রিকেট ব্যাট), ময়েজ উদ্দিন (টিফিন), আলী আহমদ (টিউবওয়েল) ও আলিম উদ্দিন সুমন (ঘুড়ি)।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোটারদের নানাভাবে প্রভাবিত করার প্রক্রিয়া চলছে। তা ভোট চলাকালীন সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে, নির্বাচনে চাঁদরাত যে কাজে লাগাতে পারে, সে-ই বিজয়মাল্য পড়ার দৌড়ে এগিয়ে যায়। এ মিথটি অনেকাংশে সত্যের ভিত্তি হিসেবে দাঁড়িয়েচজে।
ভোটার ও পর্যবেক্ষকদের আলোচনার সংমিশ্রণ পাস-ফেল এর ক্ষেত্র তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, চেয়ারে কে বসবেন এর একমাত্র সমাধান হবে ব্যালটে। এজন্য একটি উৎসবমুখর নির্বাচন চায় সাধারণ জনগণ। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, নির্বাচনে অংশগ্রহণই হোক শেষ কথা।