সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে বিসিএ: যুক্তরাজ্যে ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে প্রকৃত তথ্য জেনে পদক্ষেপ নিন

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০১৯, ১১:৫৭ অপরাহ্ণসিলেট: যুক্তরাজ্যে রেস্টুরেন্ট ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে কোন ধরনের দালালের স্মরণাপন্ন না হয়ে নিজেরা ইমিগ্রেশন আইন সম্পর্কে জেনে ও বুঝে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন, ইউকে নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ জানান, যুক্তরাজ্যের সাড়ে ১২ হাজার বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বৃটিশ কারি ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যে রেস্টুরেন্টগুলোতে ওয়ার্ক পারমিট চালুর সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে স্কিম ঘোষণা করতে পারে যুক্তরাজ্যের হোম অফিস।
ইতোমধ্যে, যুক্তরাজ্য সরকারের মাইগ্রেশন এডভাইজারী কমিটি (ম্যাক) এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শণ করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২০ বা ২০২১ সালে কারি ইন্ডাস্ট্রির সাথে সংশ্লিষ্টরা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাবার সুযোগ সুষ্টি হতে পারে। অথচ, ম্যাক-এর অভিমত পাওয়ার পর পরই ইতোমধ্যে একটি অসাধু চক্র সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে যুক্তরাজ্যে যেতে আগ্রহী লোকজনের কাছ থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফন্দি শুরু করেছে। আর তাই বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন লন্ডন ও সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহবান জানাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্যটারার্স এসোসিয়েশন (বিসিএ) মহাসচিব ওলি খান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিএ-এর কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এনাম উল হক চৌধুরী, বিসিএ- মিডল্যান্ড রিজিওনাল প্রেসিডেন্ট শেলু মিয়া, এফবিসিসিআই পরিচালকা খন্দকার শিপার আহমদ, সিনিয়র ক্যাটারার সানাম মিয়া, রোটারিয়ান মাহবুবুল হক, ব্যবসায়ী জামাল ইয়াকুব প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে ওলি খান জানান, বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন যুক্তরাজ্যের কারি শিল্পের সমস্যা বিশেষ করে শ্রমিক সংকটের বিষয়টি সে দেশের সরকারের কাছে যৌক্তিকভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ফলে, সম্প্রতি ইউকে ইমিগ্রেশন অধিদপ্তর কারি শিল্পের শ্রমিক সংকট নিরসনে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক নন-ইউরোপিয়ান দেশ থেকে আনার ব্যাপারে সুপারিশ করেছে। মাইগ্রেশন এডভাইজারী কমিটির সুপারিশ যুক্তরাজ্য সরকারের চুড়ন্ত পর্যালোচনায় রয়েছে। ইতোপূর্বে যুক্তরাজ্যের টেকওয়ে রেস্টুরেন্টগুলো ওয়ার্ক পারমিটের আওতাভূক্ত ছিলনা। সম্প্রতি মাইগ্রেশন এডভাইজারী কমিটির সুপারিশে টেকওয়েগুলোকেও ওয়ার্ক পারমিটের আওতাভূক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে শর্ট অকুপেশন লিস্টেড কোন সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ দিতে হলে বার্ষিক বেতন ২৯৫৭০ পাউন্ড পরিশোধ করতে হবে।
বিসিএ রেস্টুরেন্ট কর্মীর ক্ষেত্রে বার্ষিক বেতন ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার পাউন্ড করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিসিএ-এর এই প্রস্তাবের আলোকে স্কিম ঘোষণার দাবী জানানো হচ্ছে। ম্যাক-এর সুপারিশকৃত সরকারের নতুন পদক্ষেপটি বাস্তবায়িত হলে নন ইউরোপিয়ান দেশ থেকে দক্ষণ ও অদক্ষ কর্মী আনার আইনসিদ্ধ সুযোগে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নিয়ে যুক্তরাজ্যের কারি শিল্পের বিপর্যয় মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএ-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এনাম-উল-হক চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে ও বাংলাদেশে একাধিক মিডিয়ায় যুক্তরাজ্যে ওয়ার্ক পারমিট চালু হয়ে গেছে বলে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। ফলে, জনমনে কিছুটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৃটেনের ওয়ার্ক পারমিট বিষয়ে গত ৯ জুন দৈনিক সিলেটের ডাকসহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশিত সংবাদকে যথাযথ ও বস্তুনিষ্ট হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঐ সংবাদে সুষ্পষ্টভাবে ওয়ার্ক পারমিট স্কিমের সর্বশেষ পরিস্থিতি উদ্ধৃত করেছেন বিসিএ সভাপতি কামাল ইয়াকুব। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যুক্তরাজ্যে যেতে আগ্রহীরা যাতে প্রতারিত না হন, সে বিষয়ে প্রকৃত তথ্য নির্ভর সংবাদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের ওয়েব সাইট এবং বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের ওয়েব সাইট থেকে তথ্য গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি আহবান জানান।