এসপি হারুনের বাংলোয় শামীম ওসমান
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ১:১২ পূর্বাহ্ণনারায়ণগঞ্জ: সাম্প্রতিক সময়ে জেলা জুড়ে আলোচনার প্রধান বিষয় ছিলো ‘সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এএসপি) হারুন অর রশিদ ইস্যু’। দুই প্রান্ত থেকে দুই পক্ষই করেছেন আকার ইঙ্গিতে বাগযুদ্ধ।
সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের উদ্যোগে আয়োজিত পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন আওয়ামী লীগের সাংসদ শামীম ওসমান। আর তাতে মনে হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে ভাটা পড়েছে, গলেছে বরফ।
রোববার (১৪ মার্চ) দুপুরে তারা এক টেবিলে বসে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
নারায়ণগঞ্জের এসপির বাংলোয় সাংসদ ও এসপির সঙ্গে ওই টেবিলে বসে খাবার খান নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, নারায়ণগঞ্জের সরকারি কৌঁসুলি ওয়াজেদ আলী খোকন ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল প্রমুখ। এর আগে এসপি হারুন সাংসদ শামীম ওসমানকে স্বাগত জানান।
এপ্রিল নগরের ইসদাইরে অবস্থিত বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে নেতা-কর্মীদের নিয়ে জরুরি কর্মিসভায় শামীম ওসমান এসপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘শাহ নিজামের (নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক) বিরুদ্ধে জিডি করবেন। টিটুর (শামীম ওসমানের শ্যালক) বিরুদ্ধে মদ স্লাপাইয়ের মামলা দিয়েছেন বলে আমি ভয় পেয়ে গেছি। মানুষ পোশাকধারী সন্ত্রাসীকে দেখতে চায় না। মশা মারতে কামান দাগাতে চাই না। আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে টের পাইবেন।’
ওই দিনই এসপি হারুন পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দেন, ‘মাদক, সন্ত্রাস ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। অপরাধী যত বড় আর শক্তিশালী হোক না কেন, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’ দুজনের এমন কথার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই এসপির বাংলোয় কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলেন সাংসদ।
আজকের এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পয়লা বৈশাখ ১৪২৬ উপলক্ষে জেলা পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ষবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বাঙালি খাবারের আয়োজন করা হয়। যেখানে ছিল পান্তাভাত, মাছ ভাজা, বিভিন্ন রকম ভর্তা, ফল, চটপটি ও কফির আয়োজন।
প্রসঙ্গত, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ যোগদানের পর ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর পুলিশের ব্যবহৃত ওয়্যারলেস সেট (বেতারবার্তা) দিয়ে গোপন নির্দেশনা ও তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে সাংসদ শামীম ওসমানের দেহরক্ষী কনস্টেবল মামুন ফকিরের কাছ থেকে ওয়্যারলেস সেট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। চলতি বছরের মার্চে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সাংসদের ছেলে অয়ন ওসমানের সঙ্গে কক্সবাজারে থাকার দায়ে দেহরক্ষী মামুন ফকিরকে কিশোরগঞ্জে বদলি করা হয়। এরপর শামীম ওসমানকে দেহরক্ষী দেওয়া হলেও তিনি তা এখনো নেননি।
নারায়ণগঞ্জে পুলিশ প্রশাসন ও ওসমান পরিবারের দ্বন্দ্বের বিষয়টি এখন টক অব দ্য টাউন। এসপি হারুন সাংসদ শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।