২০ গ্রামের মানুষ এখন সহজেই শহরে যাবে
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ এপ্রিল ২০১৯, ৬:৫১ অপরাহ্ণবগুড়ার শিবগঞ্জে ২০ গ্রামের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। শিগগিরই সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় লাগোয়া পৌর এলাকায় করতোয়া নদীর অর্জনপুর ঘাটে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে। এজন্য চার কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অচিরেই সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হবে।
সেতুটি নির্মাণ হলে শিবগঞ্জ উপজেলার ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে। তারা সহজেই উপজেলা সদরে আসতে পারবেন। এখন তাদের প্রায় চার কিলোমিটার পথ ঘুরে উপজেলা সদরে আসতে হয়। এ সেতুর জন্য স্থানীয় জনগণ একাধিকবার মানববন্ধনসহ স্মারকলিপি দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পৌরসভার উদ্যোগে সেতুটি নির্মিত হচ্ছে।
জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে পৌর এলাকার অজুর্নপুর মহল্লা। ওই মহল্লার চার সহস্রাধিক মানুষকে বিভিন্ন কাজে উপজেলা সদরে আসার জন্য ঘুরতে হয় চার কিলোমিটার পথ। এজন্য তারা স্বাধীনতার পর থেকেই রাঙামাটিয়া ও অজুর্নপুরকে বিভক্ত করে রাখা করতোয়া নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই সময় থেকে অনেক জনপ্রতিনিধিই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কেউ সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি। তখন তারা নৌকায় পারাপার হতেন। কিন্তু এরই মধ্যে করতোয়া নৌকাডুবিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়।
এখন সেতুটি নির্মাণ হলে অর্জুনপুর, ছয়ঘড়িয়া পাড়া, গরীবপুর, আকন্দপাড়া, ধোন্দাকোলা, সন্নাসী ধোন্দাকোলা, দেবীপুর, খালিসপুর, অনন্তপুর, উথলী, রথবাড়ি, নারায়ণপুর, ছোট নারায়ণপুর, বাগমারাসহ ২০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ স্বল্প সময়ে সহজেই উপজেলা সদরে আসতে পারবে।
অজুর্নপুর মহল্লার বাসিন্দা জাহেদুল ইসলাম বলেন, গত তিন বছর আগে পৌরসভা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মানিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ভোটে তাকে নির্বাচিত করলে তিনি সেতু দেবেন। তার এ ঘোষণায় গ্রামের আবাল বৃদ্ধ বনিতারা ভোটযুদ্ধে নেমে তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন।
শিবগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রাশেদ হাসিম বলেন, মেয়র মহোদয়ের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে সেতুটি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। এজন্য শিবগঞ্জ পৌরসভা ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চার কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ৬৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪ মিটার প্রস্থের এ সেতুটি হবে অত্যাধুনিক নকশায়। এরই মধ্যে সেতু নির্মাণ স্থানের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বিশেষজ্ঞ দল। আমরা আশা করছি শিগগিরই সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করতে পারবো।
শিবগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মোমিনুল ইসলাম মোমিন বলেন, রাঙামাটিয়া ও অজুর্নপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় আশপাশের ২০ গ্রামের মানুষকে জরুরি প্রয়োজনে যেমন মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে উপজেলা সদরের হাসপাতাল, ভূমি অফিস, পুলিশ স্টেশন (থানা), ব্যাংক, সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যেতে চার কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। এজন্য এ নদীকে আমরা অভিশাপ মনে করতাম। কিন্তু মেয়রের পরিশ্রমের ফলে মানুষের সেই দুঃখ কষ্ট লাঘব হতে চলেছে। করতোয়া পাড়ে এখন আনন্দের বন্যা বইছে।
শিবগঞ্জ পৌরসভা মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক বলেন, সেতুটি নির্মাণ করা ছিল আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির একটি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ তিনি প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন বলেই ২০ গ্রামের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। তিনি বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসেই সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হবে।