তিনি বলেন, “অভিভাবক, পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানাব, কোনো রকমের গুজবে কান দেবেন না। কোনো ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পা দেবেন না। কারণ আমরা বিশ্বাস করি প্রশ্নপত্র ইনশাল্লাহ ফাঁস হবে না এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসমুক্তভাবে, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব যাতে কেউ ছাড়াতে না পারে, সেজন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ‘অত্যন্ত সক্রিয়’।
“তারা তীক্ষ্ণ নজরদারি করছেন, যেমনটা এসএসসিতে করেছিলেন। কেউ যদি এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে, গুজব ছড়ানো, প্রতারণা করা… তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দেশের দুই হাজার ৫৭৯টি কেন্দ্রে সোমবার একযোগে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে, যাতে অংশ নিচ্ছে ১৩ লাখ ৫১ হাজার ৫০৫ জন শিক্ষার্থী।
প্রথম দিন এইচএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র (ডিআইবিএস) এবং আলিমে কুরআন মাজিদ পরীক্ষা হচ্ছে।
আর এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় সকালে বাংলা-২ (নতুন সিলেবাস), বাংলা-২ (পুরাতন সিলেবাস); বিকালে বাংলা-১ (সৃজনশীল নতুন সিলেবাস), বাংলা-১ (সৃজনশীল পুরাতন সিলেবাস) এবং ডিপ্লোমা ইন কমার্সে সকালে বাংলা-২, বিকালে বাংলা-১ (সৃজনশীল) পরীক্ষা হচ্ছে।

গত কয়েক বছর ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। তবে গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁসের কোনো অভিযোগ উঠেনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আশা করি এবারের এসএসসি পরীক্ষার মত এইচএসসিও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে, প্রশ্ন ফাঁসহীনভাবে, নকলমুক্ত হবে, ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারব।
“পরীক্ষা নিয়ে বা প্রশ্নপত্র নিয়ে অনেক রকমের রিপোর্ট হয়। একেকটি পরীক্ষায় হাজার হাজার প্রশ্নপত্র করতে হয়, এত ধরনের প্রশ্নপত্র হয়, সেগুলো ছাপানো এবং এগুলোর জন্য যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যিনি প্রশ্ন করেন, যিনি প্রশ্ন মডারেট করেন, ছাপা হওয়ার পরে সেই প্রশ্ন আর কেউ দেখেন না, বোর্ডের কেউ দেখেন না, মন্ত্রণালয়ের কেউ দেখেন না, এ বিষয়গুলো আসলে জনগণের আসলে সেভাবে জানা নেই।”
এইচএসসি পরীক্ষাকে ‘বিশাল কর্মযজ্ঞ’ হিসেব বর্ণনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যত বিশাল কর্মযজ্ঞই হোক সবার যদি সেখানে সহযেগিতা থাকে তাহলে সেই কঠিন কাজও সহজ হয়ে যায়, আশা করি সেটিই আমাদের হবে।”

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করব, তবে একবারে সবকিছু করা সম্ভব হবে না, পর্যায়ক্রমে আমরা শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করব।”
গত এসসিএসতে প্রশ্নের সেট কোড নিয়ে সমস্যার বিষয়ে এক প্রশ্নে দীপু মনি বলেন, “সমস্যা হয়েছিল, পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আশা করছি এবার কোনো সমস্যা হবে না। আর কোথাও যদি কোনো সমস্যা হয় সেটি কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারব সে ব্যাপারে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
এইচএসসি পরীক্ষার কারণে ১ এপ্রিল থেকে ৬ মে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার কারণ ব্যাখ্যা করে দীপু মনি বলেন, “এটি বিভিন্ন কারণেই করা হয়েছে, বিভিন্ন রকমের কোচিং আছে, যেহেতু এগুলোকে এখন আলাদা করতে পারছি না এবং কিছু অসাধু চক্র নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও নানা রকমের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে যায়, সেজন্য সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি।
“আমি আশা করছি প্রতিটি জেলা উপজেলা সর্বত্র প্রশাসন, পুলিশ মনিটরিং করবেন এবং এগুলো সত্যি সত্যি বন্ধ থাকছে সে বিষয়টি তারা নিশ্চিত করবেন।”
গত এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ক্রটি নিয়ে শিক্ষাবোর্ডে তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী কলেন, সেটি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। –বিডিনিউজ