সিলেট শিল্পকলা একাডেমি পদক তিনবছরে পাচ্ছেন ১৫জন
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মার্চ ২০১৯, ১০:৫২ অপরাহ্ণবিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম।।
সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি পদক দেওয়া হচ্ছে শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের পরিচিত ১৫ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে। ২০১৬, ১৭ ও ১৮ সালের জন্য পাঁচজন করে মোট ১৫জনকে একসাথে এ পদক দেওয়া হবে।
গত সোববার শিল্পকলা একডেমি কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশ গুপ্ত স্বাক্ষরিত একবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
২০১৬ সালের পদকপ্রাপ্তরা হলেন, ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ (লোকসংস্কৃতি), শাকুর মজিদ (চলচ্চিত্র), ক্ষিতীশ দাশ (যন্ত্রশিল্পী), জামাল উদ্দিন হাসান বান্না (কন্ঠ সংগীত), আতাউর রহমান আতা (ফটোগ্রাফি)।
এদিকে আগামী শনিবার (১৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ৩টায় পূর্ব শাহী ঈদগাস্থ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গুণীজনদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সম্মতি দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডঃ এ কে আব্দুল মোমেন এমপি।
এদিকে ২০১৬ সালে স্বীয় কর্মগুণে শিল্পকলা সম্মাননা পদক জয়ী বিশিষ্টজনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রকাশ করা হলো।
আবুল ফতেহ ফাত্তাহ:
সিলেট শিল্পকলা সম্মাননা পদকে ভ‚ষিত ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ ১৯৫৮ সালের ১ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার গহরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মরমিকবি নূর মোহাম্মদের উত্তরপুরুষ মো. দরস মিয়ার পুত্র ফাত্তাহ। মা বেগম ফরিদুন্নেসা। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
ড. ফাত্তাহ নবীগঞ্জ জে কে হাইস্কুল, মদনমোহন কলেজ, মুরারিচাঁদ কলেজ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
২০০৩ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয থেকে ‘সিলেট-গীতিকার বৈচিত্র্য : সমাজ ও সংস্কৃতির নিরিখে’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভ রচনা করে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। উল্লেখ্য যে, ফোকলোর বিষয়ে সিলেট বিভাগের মধ্যে তিনিই প্রথম এ ডিগ্রিধারী।
২০১৮ সালে মদন মোহন কলেজ থেকে প্রফেসর ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
শাকুর মজিদ:
বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শাকুর মজিদ পেশায় স্থপতি। নেশায় লেখক, নাট্যকার, আলোকচিত্রী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। শৈশবে কবিতা দিয়ে লেখালেখি শুরু করলেও সাহিত্য ও নাটকের সকল শাখায় তার অবাদ বিচরণ রয়েছে।
শাকুর মজিদের বাবার নাম আব্দুল মজিদ ও মা ফরিদা খাতুন। ১৯৬৫ সালের ২২ অক্টোবর তিনি বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের দোয়াখাঁ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে মাথিউরা মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগে ভর্তি হন ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিমকে নিয়ে শাকুর মজিদ ‘ভাটির পুরুষ’ নাটক ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। তাঁর জীবনী অবলম্বনে লিখেছেন মঞ্চনাটক ‘মহাজনের নাও’। জমিদার হাসন রাজাকে নিয়ে লিখেছেন মঞ্চনাটক ‘হাসনজানের রাজা’। এ দু’টি মঞ্চনাটক সংস্কৃতি অঙ্গনে বেশ সাড়া ফেলেছে।
ইতিমধ্যে শাকুর মজিদ ৪০’র অধিক বই লিখেছেন। এজন্য তিনি নামি-দামি অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।
আতাউর রহমান আতা:
বর্তমান সময়ের সফল ও বয়োজ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক আতাউর রহমান আতা ১৯৫৭ সালে সিলেটের মেন্দিবাগে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে হাসান মার্কেটে মামা জয়নাল আবদীনের স্টুডিওতে তাঁর ছবি তোলার হাতে খড়ি। টানা আট বছর ইনডোর ও আউটডোর ছবি তোলার মাধ্যমে তিনি অভিজ্ঞ ফটোগ্রাফার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলেন।
আতাউর রহমান আতা ১৯৭৩ সালে দেশবার্তায় ফটো সাংবাদিক হিসেবে যোগদান করেন। ফটো বা আলোকচিত্রের যে সংবাদমূল্য আছে, অল্পদিনের মধ্যে কাজের মাধ্যমে দেশবার্তায় তিনি তা প্রমাণ করতে সক্ষম হন।
১৯৮৮ সালে ঢাকায় প্রাচীনতম ক্যামেরা রিক্রিয়েশন ক্লাব আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় সারাদেশের মধে ‘স্নেহ ভালোবাসা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে আতাউর রহমান আতার তোলা ছবি প্রথম পুরস্কার লাভ করে।
আতাউর রহমান আতা’র স্ত্রী ইন্তেকাল করেছেন। পারিবারিক জীবনে তাঁর ৪ পুত্র ও ৩ কন্যাসন্তান রয়েছে।
জামাল উদ্দিন হাসান বান্না:
কন্ঠশিল্পী জামাল উদ্দিন হাসান বান্না ১৯৫৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন।