ইট দিয়ে বেডের পায়া, বাঁশ দিয়ে স্যালাইন স্ট্যান্ড
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ৭:০৮ অপরাহ্ণবিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম ডেস্ক।।
নামেই আধুনিক’ হবিগঞ্জের ২০ লক্ষাধিক মানুষের প্রধান সরকারী চিকিৎসালয় ‘হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল’। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, রোগীর শয্যা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সংকট এখানে চরম আকার ধারণ করেছে। এছাড়া হাসপাতালে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, মাদকসেবী ও দালালদের দৌড়াত্ব লাগামহীন।
জোড়া-তালি দিয়েই চলছে ‘আধুনিক’ হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম! সরেজমিনে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে লক্ষ্য করা যায়, কয়েকজন রোগী শুয়ে আছেন ভাঙ্গা সিটে। সিটগুলো এতই অকেজো যে, দাঁড় করানো হয়েছে ‘ইটের পায়ে’। মহিলা মেডিসিন ও সার্জারী ওয়ার্ডে ‘বাঁশের টুকরো’ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘স্যালাইন স্ট্যান্ড’। পুরো হাসপাতাল জুড়েই রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। হাসপাতালের অভ্যন্তরে স্থাপিত একমাত্র নলকূপটি তুলে নেয়া হয়েছে অজ্ঞাত কারণে। এ অবস্থায় অনিরাপদ পানি পান করতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।
সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য স্থাপিত পানির ফোয়ারাটি বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। ভাঙ্গাছোড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডের টয়লেটের দরজা। এতে করে বিপাক ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে নারী রোগীদের। শয্যা সংকট থাকায় বহু রোগীকে দিনের পর দিন থাকতে হচ্ছে মেঝেতে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের ড্রেনগুলোতে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। যে কারনে দূর্গন্ধ এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।
অভিযোগ রয়েছে, একটি দালাল সিন্ডিকেটের কারনে হাসপাতালে প্রায়ই দেখা দেয় রক্ত সংকট। এতে প্রতারণা, হয়রানী ও ভূগান্তির শিকার হন রোগীরা। ওষুধের সংকট তো লেগেই আছে।
হাসপাতাল সুত্র জানায়, নামে ২৫০ শয্যার হলেও বাস্তবে এ সংখ্যা মাত্র ২শ এর কিছু বেশী। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, প্যাথলজিষ্ট ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকটও প্রকট। বিষেশ করে এখানে দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য রয়েছে মেডিসিন, কার্ডিওলজিস্ট ও গাইনী বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ।
শুধু তাই নয়, হাসপাতাল থেকে সরবরাহকৃত খাবার খুবই নিন্মমানের বলে অভিযোগ করেছেন বহু রোগী।
তারা জানান, অনেক সময় ডাক্তারের দেয়া ‘পথ্য’ অনুযায়ী খাবার সরবরাহ না করায় বিপাকে পড়তে হয় তাদের। দৈনিক হাজিরায় ভাড়াটে বহিরাগতদের দিয়ে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করানোর মত অভিযোগ রয়েছে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রতিন্দ্র চন্দ্র দেব ডাক্তার ও শয্যা সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, চলতি সনের জানুয়ারী থেকে ২৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হলেও বাস্তবে তা নেই। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে ডাক্তার সংকট। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কে বার বার লিখিত ভাবে জানানো হলেও এর সুরাহা হচ্ছে না। উপজেলা থেকে ডাক্তার এনে সংকট দূরীকরনের চেষ্টা করা হচ্ছে’’।