বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন: মারা গেল ৯৩০টি ব্রয়লার মুরগী
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুন ২০১৯, ৭:২৬ অপরাহ্ণগোলাপগঞ্জ: গোলাপগঞ্জে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করার অভিযোগে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় মারা গেল একটি ফার্মের ৯৩০টি ব্রয়লার মুরগী।
ঘটনার পর থেকে পথে বসার উপক্রম হয়েছে ফার্মের খামারি যুবক জিয়াউল হকের। নিজের উপার্জনের একমাত্র সহায় সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে ঘুরছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের ধারে ধারে। ধারস্থ হয়েও কোন পথ খুজে পাচ্ছেন না ভুক্তভুগী উপজেলার কালিডহর গ্রামের মৃত মছব্বির আলীর পুত্র জিয়াউল হক(২৫)।
ঘটনাটি গতকাল বুধবার (১৩জুন) উপজেলার বুধবারীবাজার ইউপির চন্দরপুর বাজারের নিউ মার্কেটের ২য় তলায় আশা পোল্ট্রি খামারে ঘটে।
ক্ষতিপূরণের দাবিতে খামারি জিয়াউল হক বাদি হয়ে পল্লীবিদ্যুৎ-১ এর কর্মকর্তা সুনামপুর কেন্দ্রের লাইনম্যান লোকমান আহমদ(৩৮) কে বিবাদী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন, বাড়িতে নতুন বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ নিতে চাইলে ওই কর্মকর্তা চাঁদা দাবি করলে তার সাথে জিয়াউল হকের বিরোধ চলে আসছিল।
উক্ত খামারে লোকসান হওয়ায় বিগত ২মাসের বকেয়া বিল জমা ছিল। অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন তিনি গোলাপগঞ্জ বাজারে ছিলেন। এরই সুবাধে ওই দিন দুপুরে বিবাদী লোকমান আহমদ আরও ২জন ব্যক্তি নিয়ে আমার খামারে আসেন এবং বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে চাইলে চন্দরপুর বাজারের ব্যবসায়ী হাসান আহমদ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে তিনি বিবাদীকে বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে আমার ফার্মের সকল মুরগী মারা যাবে। এসময় তিনি সম্পূর্ণ বিল পরিশোধের শর্তে ১৫মিনিট সময় চান।
কিন্তু বিবাদীরা এ অনুরোধ না শুনে লাইন বিচ্ছিন্ন করলে খামারে থাকা ৯৩০টি মুরগী গরমে মারা যায়। এর ফলে ৩লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।
জানা যায়, পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এতগুলো প্রাণীর একসঙ্গে মৃত্যু সত্যিই দুঃখজনক। পল্লীবিদ্যুতের কর্মকর্তাদের মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে কিছু সময় দেওয়া উচিত ছিল।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক বাপ্পী রুদ্র পাল প্রাথমিকভাবে খামারের মুরগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে অভিযুক্ত পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান লোকমান আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোন ফার্মের লাইন বিচ্ছিন্ন করিনি। খামারির অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
গোলাপগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মামনুর রশীদের সাথে এ ব্যাপারে আলাপ হলে তিনি বলেন, আমরা বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য ২দিন যাবত উপজেলা জুড়ে মাইকিং করেছি। পরবর্তীতে নিয়ামানুযায়ী অভিযান পরিচালনা করে বকেয়া বিল পরিশোধ না করার অভিযোগে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এখানে ছাদের উপর ফার্ম ছিল বলে আমাদের জানা নেই। আমরা বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় শুধুমাত্র দোকানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।