রাতে অসুস্থ গরু জবাই, দিনে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ মে ২০১৯, ৬:১৭ অপরাহ্ণদিনাজপুর: দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দর বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অসুস্থ আর রোগাক্রান্ত গরু ছাগলের মাংস। কম বেশি প্রতিটি কসাই তাদের বাসা বাড়িতে ব্যবহার করছেন ডিপ ফ্রিজ। সকালে বিক্রির জন্য রাতে জবাই করা মাংস ফ্রিজে রাখছেন তারা।
বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে ডাক্তারি ফিটনেস সনদের প্রয়োজন থাকলেও তার কোনো তোয়াক্কা করেন না মাংস ব্যবসায়ীরা। এতে একদিকে যেমন প্রতারিত হচ্ছেন গ্রাহক অন্যদিকে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে স্বাস্থ্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ কসাই অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত গরু লোক চক্ষুর অন্তরালে রাতের অন্ধকারে জবাই করে সকালে বস্তাভর্তি মাংস বাজারে নিয়ে ফ্রেশ গরুর মাংস বলে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এসব পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো আইন মানা হয় না। রাণীরবন্দরে নির্ধারিত জায়গায় পশু জবাই করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে রাতের বেলা কসাইদের বাসাবাড়ির পাশে কিংবা বাঁশবাগানে।
জবাইয়ের আগে প্রত্যেকটি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস কর্তৃক দেখভাল করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। রোগাক্রান্ত গরু কম দামে কিনে বেশি দামে মাংস বিক্রি করছে মাংস ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে রাণীরবন্দর বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৪৮০ টাকা থেকে ৫২০ টাকা। ছাগলের মাংসের কেজি ৬৪০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাজারে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় মাংসের বাজারে নির্ধারিত মূল্য তালিকা না থাকায় ও অসুস্থ গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করায় সাতজন মাংস বিক্রেতাকে ৩৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীবন্দর বাজারে চালানো হয় এ অভিযান। আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেজবাউল করিম।
দণ্ডপ্রাপ্ত মাংস বিক্রেতাদের ছয়জন হলেন মো. শামসুল হক (৫৫), মো. কাল্টু (৬০), মো. শামসুদ্দিন (৩৫), রিয়াজুল ইসলাম (৩৯), আবদুস সাত্তার (৫২) ও আকবর আলী (৫০)। তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। আর ছাগলের মাংস বিক্রেতা মো. নুর ইসলামকে (৩২) ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও চিরিরবন্দর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেজবাউল করিম বলেন, অভিযানের প্রথম দিন ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। পুরো রমজান মাসজুড়েই এ অভিযান চলবে। কোথাও কোনো অনিয়ম পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাৎক্ষণিক জেল জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।