শপথ নেয়ায় সুলতান মনসুর বহিষ্কার!

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মার্চ ২০১৯, ৬:৩৬ অপরাহ্ণঢাকা: দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু এ ঘোষণা দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।
সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর একাদশ সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন।
শপথ গ্রহণের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সকল কথার উত্তর আমি দেব না এ কারণে যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সেসব সিদ্ধান্তের সময় আমিও ছিলাম। আমিও ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে একটা কথা বলতে পারি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার নলেজেই আমি এটা করেছি।’
সুলতান মনসুরের এই বক্তব্য’র দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর ড. কামাল হোসেন দলীয় ফোরাম, পত্র-পত্রিকা বা কোনো অনুষ্ঠানে আকার ইঙ্গিতে এই নির্বাচনটাকে স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন এটা প্রহসনের নির্বাচন। সুতরাং একটা প্রহসের নির্বাচনের পর কী করে তিনি শপথ গ্রহণের অনুমতি দেবেন?”
তিনি বলেন, ‘যেখানে মাত্র আট জন জনগণের ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। আর বাকি ২৯২ জন সংসদ সদস্য হচ্ছেন ভোট ডাকাতদের সংসদ সদস্য। সুতরাং তাদের পক্ষে উনি (ড. কামাল হোসেন) কীভাবে রায় দেবেন?
গণফোরামের আরেক সংসদ সদস্য মেকাব্বির খান শপথ নেবেন কী না, জানতে চাইলে মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘উনি (মোকাব্বির খান) কিন্তু পরিষ্কার বলে দিয়েছেন ‘শপথ নিচ্ছেন না। এই বিষয়ে পরে জানাবেন। অর্থাৎ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে দলীয়। সুতরাং এটা নিয়ে বিতর্ক করার সুযোগ নেই। এ বিষয় নিয়ে কোনো বিতর্ক উঠতে পারে, সে রকম কিছু দেখছি না।’
এদিকে শপথ গ্রহণের পর সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন ‘নির্বাচনের পর থেকে আমি আমাদের ফোরামে এবং গণমাধ্যমে বলেছিলাম, আমি যাব। সেই ধারাবাহিকতায় যা বলেছিলাম তা করেছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী। ৩০ ডিসেম্বর পর যা বলেছি তাই করেছি’— বলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।
ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই সরকারি দলের প্রতিনিধিত্ব করছি না। ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেছি। ধানের শীষ এক সময় ছিল মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাপের মার্কা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এই মার্কা হয়েছে বিএনপির। বর্তমানে এই মার্কা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মার্কা। কাজেই আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নীতিনির্ধারক হিসেবে ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচন করেছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মনসুর বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিএনপি বড় দল স্বীকার করতেই হবে। তাদের নেতা-কর্মীরা কাজ করেছে। তাছাড়া সর্বদলীয় লোকজন আমার নির্বাচনে কাজ করেছে। এই আসনে কখনো ধানের শীষ জয়যুক্ত হয়নি। সংসদে আমি জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধিত্ব করব।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন করতে হলে ইসির নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধিত দলের সদস্য হয়ে নির্বাচন করতে হয়, সেজন্য গণফোরামের তালিকায় তাদের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে আমাকে নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছিল। সেজন্য আমি অবশ্যই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বাকি ৭ জনকে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সুলতান মনসুর বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাব শপথ নিয়ে ন্যায্য দাবি ও সমস্যা নিয়ে তারা সংসদের কথা বলুক। তাদের বক্তব্য সংসদের ভিতরে বাইরে আলোচনা হতে পারে। আওয়াজ উঠতে পারে।’ -সারাবাংলা