জামায়াতে পদত্যাগ-বহিস্কার, নয়া উদ্যোগে সংশয়

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:০৮ পূর্বাহ্ণবিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম।।
একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে বির্তকে থাকা জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিয়ে হঠাৎ তোলপাড় শুরু হয়েছে। নির্বাচনের ক্যারিকেচা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন যখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়, ধানের শীষের প্রার্থীরা নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা এবং ভোটের অনিয়ম নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তখন জামায়াতের ইসলামী নিয়ে এ তোলপাড়।
সর্বত্রই এখন আলোচনায় জামায়াত। দলটি কি আবার নাম পরিবর্তন করছে; নাকি দুইভাগে বিভক্ত হচ্ছে? দলটি কী অতীত ভূমিকার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইবে; ২০ দলীয় জোট থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে; নাকি রাজনীতিতে নতুক কিছু ঘটতে যাচ্ছে? দলটি নিয়ে চলছে হাজারো প্রশ্ন, আলোচনা-বিতর্ক।
এদিকে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার কারণে ক্ষমা চাওয়া ও দলের সংস্কারকে কেন্দ্র করে দলের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগ করলেও ক্ষমা চাইবে না জামায়াতে ইসলামী। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম নির্বাহী পরিষদের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানাগেছে।
সাম্প্রতিসময়ে কেন্দ্রী শুরা সদস্যদের প্রস্তাব অনুযায়ী নতুন নামে সংগঠন করার বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে গেলেও তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে দলের অভ্যন্তরে। এ ইস্যুকে কেন্দ্র করেই পদত্যাগ করেছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। বহিষ্কার হয়েছেন ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।
তবে জামায়াতের নতুন উদ্যোগে নিয়ে শীর্ষপর্যায়ের নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে ক্ষমা চাওয়া একটি বিবেচ্য বিষয়। ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাদের মান ও মর্যাদা যুক্ত। ক্ষমা চাইলে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের প্রত্যাশা ছিল, জামায়াতের হাইকমান্ড নতুন সংগঠনের যাত্রা শুরু করবেন।
কিন্তু গত জানুয়ারিতে মজলিসে শুরার সদস্যরা নতুন নামে সংগঠন করার বিষয়ে মতামত দিলেও তা প্রকাশ পায় এ মাসে। এখানেই দলের পরিবর্তন প্রত্যাশীদের প্রশ্ন।
এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জানান, নতুন নামে সংগঠনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ দিকে। সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। এ কমিটির প্রতিবেদনের পরই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেবে জামায়াত।
অন্যদিকে জামায়াত প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে জামায়াত নতুন নামে আসার কৌশল নিতে পারে। নতুন কোনো চিন্তা-ভাবনায় হয়তো তারা এসেছে। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিষয় নিয়ে ৪৭ বছর পর ক্ষমা চাওয়ার বিষয় কেন এলো? সেটাও কোনো কৌশল কি না ভেবে দেখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য এখনো জামায়াত ক্ষমা চায়নি। ক্ষমা চাওয়ার আগে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে ক্ষমা চাইলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বন্ধ হবে না।