দেশেই হাইব্রিড গাড়ি তৈরি করে দেখালেন রুয়েট শিক্ষার্থীর
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মে ২০১৯, ৪:১৫ অপরাহ্ণরাজশাহী: দেশে প্রথম বারের মতো হাইব্রিড ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) গাড়ি উদ্ভাবন করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একদল গবেষক।
মাত্র দুই বছরের পরিশ্রমে তারা একইসঙ্গে তিনটি সুবিধা সম্পন্ন এই গাড়িটি তৈরি করেছেন। হাইব্রিড এই গাড়িটিতে একইসঙ্গে ইলেক্ট্রিক্যাল, ইঞ্জিনসেবা, সোলার চার্জিং সিস্টেম রয়েছে। ফলে জ্বালানি শেষ হলেও এটি আপনাকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে থেমে থাকবে না।
গাড়িটি উদ্ভাবন গবেষক দলের প্রধান ছিলেন রুয়েট যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক। তিনি জানান, তাদের এই হাইব্রিড গাড়িটিতে সোলার সিস্টেম থাকায় জ্যামে আটকে থাকলেও ব্যাটারি চার্জ হবে। তাই শক্তি বা জ্বালানির অপচয় হওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়া এতে প্লাগ চার্জিং সিস্টেমও আছে। প্রয়োজনে বিদ্যুতের সাহায্যে চার্জ দেয়া যাবে।
গবেষক দলে আরো পাঁচ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা হলেন- অধ্যাপক ফজলুর রশীদ, যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান, ওবায়দুল হাসান, তানভির রহমান, তরিকুল ইসলাম ও ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল হক ফরিদ।
শিক্ষার্থীরা জানান, রাজশাহীর একটি গ্যারেজ থেকে পরিত্যক্ত একটি সংগ্রহ করে হাইব্রিড গাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। পোর্টেবল ডিভাইসের মতো এই প্রযুক্তিটি এখন যেকোনো গাড়ির সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে। গাড়িটিতে ব্যাটারি ব্যবহার করেও ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি পাওয়া সম্ভব। একবার ফুল চার্জ করলে জ্বালানি ব্যবহার ছাড়াও গাড়িটি দিয়ে একটানা ২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যাবে। একটি পরিত্যক্ত গাড়ি থেকে এ ধরনের হাইব্রিড গাড়ি তৈরি করতে মাত্র ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।
বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বে যে পরিমান পেট্রল আছে তা সব ফুরিয়ে যাবে। ফলে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এরইমধ্যে বিকল্প জ্বালানি উদ্ভাবনের কাজে লেগে গেছে। রুয়েটের গবেষকদের নতুন এই উদ্ভাবন প্রমাণ করলো এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকছে না। তারাও চেষ্টা করছে বিকল্প শক্তি কাজে লাগিয়ে গাড়ি চালানোর।
গবেষকদল প্রধান অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক বলেন, আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে জাপানসহ ইউরোপীয় দেশে পেট্রল ও ডিজেল ইঞ্জিন তুলে দিয়ে ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) চলবে। এসব গাড়ির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো জ্বালানি কম খরচ হবে এবং পরিবেশ দূষণ হবে না। এজন্যই উন্নত দেশগুলো জ্বালানি ছাড়া এ গাড়ি চালানোর দিকে নজর দিচ্ছে। বাংলাদেশেও এটাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এসময় তিনি নতুন উদ্ভাবিত হাইব্রিড গাড়িটি বাজারজাত করার জন্য সরকারের সহযোগিতা চান।