বিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম: বিয়ানীবাজারের কাকরদিয়া রুকনীবন্দ হাওরে আবাদী জমি গর্ত করে ইটভাটায় মাটি বিক্রির ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ হলে প্রশাসন নড়েচড়ে উঠে। গত শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিরাজ নামে একজনকে গ্রেফতার করে। পরদিন তিনি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
অপর দু’জন রোববার আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার উপজেলায় নতুন-পুরনো মিলে বেশকয়েকটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এদের অনেকেরই পরিবেশের ছাড়পত্র কিংবা বৈধ কাগজপত্র নেই। তারপরও ইটভাটাগুলো নির্বিঘ্নে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এজন্য উপজেলাজুড়ে গড়ে উঠেছে একটি অসাধু চক্র। তারা টাকার বিনিময়ে আবাদী জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট করে মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছে। আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ‘এসক্লেভেটর’ ব্যবহার করে জমি ১০-১৫ ফুট গর্ত করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় পরিবেশবাদীরা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে ২০-২৫ একর ভূমি ১৫-১৬ ফুট গর্ত করে মাটি পাশ্ববর্তী অটোব্রিক ফিল্ডে বিক্রি করায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের আলী আহমদ গত বুধবার (২৭ মার্চ) মাটি ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন, সাধন রায়সহ কয়েকজনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। এজাহারে তিনি ৫ লক্ষ টাকার মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি এবং ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
এ মামলায় পুলিশ গত শুক্রবার গভীর রাতে বিরাজ উদ্দিনকে (৪৫) আটক করে শনিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করে। তবে আটক বিরাজ ঐ মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় বাদীর উপস্থিতিতে আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে রোববার (আজ) মামলার এজাহারভূক্ত আসামী ইকবাল হোসেন ও সাধন রায় সিলেটে বিয়ানীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের প্রার্থনা করেন। তখন বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ খবরে মাটি বিক্রি চক্রের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতরা চরম আতংকের মধ্যে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাহিদুল হক বলেন, কৃষি জমি নষ্ট করে মাটি বিক্রির সাথে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে। কোন তদবিরে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন হার্ডলাইনে রয়েছে।
এ সংক্রান্ত মূল খবর পড়ুন: