সিলেট-৬: নৌকার প্রচারণা তুঙ্গে, হিসেবে সোনালী আঁশ-ঈগল
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ৩:২২ অপরাহ্ণভোটারদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নৌকা, সোনালী আঁশ, ঈগল
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি’র নৌকা প্রতীকের প্রচার-প্রচারণা বেশ জোরোশোরে চলছে। প্রত্যেক ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলদের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি প্রচারণায় যোগ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যে প্রবাসী অনেক নেতা এসে প্রচারণায় যোগ দিয়েছেন। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও বসে নেই। এতে করে নির্বাচনী এলাকায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।
প্রতিদিন বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের গণসংযোগের পাশাপাশি অন্তত ৪-৫ টি পথসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বক্তব্য রাখছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খানসহ দু’উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
সূত্রমতে, নির্বাচনের শুরুতে আওয়ামী লীগের প্রচারণায় কিছুটা ধীরগতি ছিল। কিন্তু গত ৩-৪ দিন থেকে দ্রুত গতিতে সবকিছু বেড়েছে। আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মীরা সকাল-সন্ধ্যা-গভীর রাত পর্যন্ত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে বাস্তবায়িত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নচিত্র জনগণকে আরেকবার সরণ করে দিচ্ছেন। এ কারণে নির্বাচনের প্রথমদিকের চেয়ে ভোটের চিত্রেও ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, ২০ ডিসেম্বর সিলেটের জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার বিজয় নিশ্চিত করার জন্য স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী মূল স্রোত রয়েছে। তিনি বলেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরণের নেতিবাচক কর্মকান্ডের অভিযোগ নেই। এজন্য বলতে পারি সিলেট-৬ আসনে নৌকার বিজয় হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই।
গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরিণ মতানৈক্য নিরসন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত দু’দিন আগেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির সাফি চৌধুরী এলিম এর নেতৃত্বাধীন বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতার সাথে ঘরোয়া পরিবেশে বৈঠক করেছেন নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। এ বৈঠকে বিগত সময়ে ঘটে যাওয়া সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা হয় এবং নৌকা প্রতীকের বিজয়ের স্বার্থে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার খবর রটেছে। এরপর থেকেই মূলত: দু’উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জয়ের ব্যাপারে বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন।
গোলাপগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহেল আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ বৃহৎ দল। এখানে রাজনৈতিক মতানৈক্য থাকতেই পারে। ঐক্য প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্থানীয় এমপি’র ওপর নানা কারণে আমরা অভিমান করেছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে শিরধার্য।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি বলেন, ‘আমরা সবাই একই পরিবারের লোক। কিন্তু নানা কারণে নিজেদের মধ্যে মান-অভিমান তৈরি হওয়ায় আমি এলিম ভাইসহ কয়েকজনের সাথে কথা বলেছি। এতে তারা খুশি হয়েছেন এবং সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ এক লাখ ৯৬ হাজার ১৫ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের ফয়সল আহমদ চৌধুরী পেয়েছিলেন এক লাখ ৮ হাজার ৮৯ ভোট।
এবারকার নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ভোটে নেই। এজন্য এমপি নাহিদের ভোটের বৈতরণী পার হওয়া অনেকটা সহজ বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে, তৃণমূল বিএনপি’র প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরীকে নিয়ে সচেতন মহলে নানা আলোচনা চলছে। যদিও এখন পর্যন্ত তিনি জনসমক্ষে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেননি। আগামী কিছুদিনের মধ্যে পারা কি সম্ভব?
রাজনীতি ও ভোটের হিসেবে শেষ কথা বলতে কোনো কিছু নেই। যেকোন সময় মাঠের রূপ-প্রকৃতি পাল্টে যেতে পারে। এজন্য ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে নৌকা-সোনালী আঁশ-ঈগল প্রতীক ভোটারদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রয়েছে। বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।