আজ ঐতিহাসিক ৭জুন
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জুন ২০১৯, ১২:১০ অপরাহ্ণবিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম: আজ ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ৬ দফার ভূমিকা অপরিসীম। ১৯৬৬ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়।
এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআর’র গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১০ জন শহীদ হন।
এদিকে শহীদ মনু মিয়া বিয়ানীবাজারের সন্তান। এজন্য এ দিনটিকে স্থানীয়ভাবে শহীদ মনু মিয়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
তৎকালীন সরকার মনু মিয়ার লাশ গুম করে ফেলে। ফলে তাঁর পরিবার লাশ দাফনের সুযোগটিও পায় নি। শহীদ মনু মিয়ার বাড়ি বিয়ানীবাজার পৌরসভার নয়াগ্রামে। তাঁর পিতার নাম মনোহর আলী। মনু মিয়ার পুরো নাম ফখরুদ্দৌলা খান মনু মিয়া। তাঁর একমাত্র কন্যা পুতুল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার নয়াগ্রামে ৬৬’র ৬ দফা আন্দোলনের প্রথম শহীদ মনু মিয়ার বাস্তুভিটায় ২০১৭ সালে স্থাপন করা হয়েছে ‘শহীদ মনু মিয়া স্মৃতিস্তম্ভ’। যুক্তরাষ্ট্রস্থ শহীদ মনু মিয়া স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে নির্মিতব্য দৃষ্টিনন্দন এ স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আলী আহমদ। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মােণে ব্যয় হয় ৬ লক্ষাধিক টাকা।
সূত্রমতে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপসহীন সংগ্রামের ধারায় উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ৬ দফা উত্থাপন করেন এবং পরের দিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।
কিন্তু এ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি আয়োজক পক্ষ থেকে গুরুত্ব প্রদান করেনি। তারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালেই বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা পেশ করেন। এ নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
পরে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু ১৩ই মার্চ ৬ দফা এবং এব্যাপারে দলের অন্যান্য বিস্তারিত কর্মসূচি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে পাস করিয়ে নেন। পরবর্তীতে এই ৬ দফার প্রতিটি দফা বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে তুলে ধরেন। বাংলার সর্বস্তরের জনগণ এই ৬ দফা সম্পর্কে যখন সম্যক ধারণা অর্জন করলো তখনই ৬ দফাকে বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হলো। পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক ৬ দফাভিত্তিক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনই ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়।