এ হত্যাকান্ডটি ঘটেছে গত রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির বাউরভাগ ২য় খন্ড গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফারুক আহমদের স্ত্রী ৪ সন্তানের জননী হোসনা বেগম (২৮) এর সাথে তার স্বামীর চাচাতো ভাই প্রতিবেশি মোস্তফা (২৭) এর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
বিষয়টি বুঝতে পেরে ফারুক আহমদ স্ত্রী হোসনা বেগমকে পরকীয়ায় বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হোসনা ও তার পরকীয়া প্রেমিক মোস্তফা, স্বামী ফারুককে খুন করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত রবিবার গভীর রাতে ফারুক আহমদ যখন তার নিজ শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন, ঠিক তখনই পাষন্ড স্ত্রী হোসনা বেগম, পরকীয়া প্রেমিক মোস্তফা ও তাদের সহযোগীরা মিলে বসত ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ফারুককে গলাকেটে নির্মম ভাবে হত্যা করে। হত্যা করার পর ফারুকের রক্তাক্ত লাশ পাশর্^বর্তী গোরকপুর গ্রামের প্রবাসী মাসুক আহমদের সেফটিক ট্যাংকিতে ফেলে দেওয়া হয়।
ফারুক আহমদের কোন সন্ধান না পেয়ে তার স্বজনরা হোসনা বেগমের নিকট ফারুক কোথায় জানতে চাইলে, সে বলে গত রবিবার ভোরে ফারুক কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হয়ে গেছেন, তারপর আর বাড়ী ফেরেনি। ফারুককে খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে চাচা সমছুল হক কানাইঘাট থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়রী করতে আসলে থানার ওসি মোঃ আব্দুল আহাদ ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিক ফারুক আহমদের বাড়ীতে পুলিশ পাঠান।
থানার এস.আই সুরঞ্জিত ঘটনাস্থলে গিয়ে ফারুক আহমদের শয়ন কক্ষে ঢুকে বিছানার খাঁটের উপর, ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেখতে পেয়ে তিনি হোসনা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
থানায় আনার পর হোসনা বেগমের লোমহর্ষক জবানবন্দীর প্রেক্ষিতে থানার ওসি আব্দুল আহাদসহ একদল পুলিশ বুধবার ভোরে জবাইকৃত ফারুক আহমদের লাশ সেফটিক ট্যাংকির ভিতর থেকে উদ্ধার করেন।
থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন, ফারুক আহমদকে তার স্ত্রী হোসনা বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক মোস্তফা মিলে জবাই করে হত্যা করেছে। স্ত্রী হোসনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মোস্তফা সহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান চলছে। স্ত্রীকে পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিওমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।