প্রধান উপদেষ্টার সাথে সংলাপ শেষে মির্জা ফখরুল

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ৬:১৬ অপরাহ্ণপ্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা আমাদের জানিয়েছে নির্বাচন অনুষ্ঠান অন্তর্বতী সরকারের প্রধান প্রাইওরিটি। আমাদের দাবিগুলো তাদেরও দাবি। একই সঙ্গে কবে নির্বাচন হবে তার রোডম্যাপ আমরা অন্তর্বতী সরকারের কাছে চেয়েছি।
শনিবার (৫ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সংলাপে প্রথম দল হিসেবে অংশ নেয় বিএনপি। তাদের জন্য নির্ধারিত সময় ৩০ মিনিট থাকলেও প্রায় ১ ঘন্টা এ বৈঠক স্থায়ী হয়। বের হয় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএনপি মহাসচিব।
সংলাপে কী আলোচনা হলো জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন: আমরা নির্বাচন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার-কমিশন সব বিষয়ই আমরা তুলে ধরেছি। আমাদের মতামত আমি তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি নির্বাচন কমিশন আইন স্থগিত করে সকল রাজনৈতিক দলের মতামত এবং ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে। কবে নির্বাচন হবে সে বিষয়ে আমরা একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি। এনআইডি কার্ড যেটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অধিনে নেওয়ার জন্য একটা আইন করা হয়েছিলো, সেটা অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে বাতিল করতে বলেছি।
তিনি আরও বলেন: বিতর্কিত কোন ব্যাক্তি যেনো নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটিতে না যায়, সে কথা বলেছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ভুয়া ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সকল ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করতে বলেছি। ১৪-১৮-২৪ সালে যেসকল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনাররা ছিলেন, তাদের ভুয়া-ব্যর্থ এবং পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিযোগে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছি। বিচারপতি খায়রুল হক যিনি নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংসের মূল হোতা, তত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের নায়ক ছিলেন তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।
বিএনপি মহাসচিব আরও যোগ করেন: প্রশাসনে যারা বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর হিসেবে লুটপাটে সহায়তা করেছে, তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ লোকদের আনার কথা বলেছি। সেই সাথে পত্রপত্রিকায় জেলা প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত যে খবরটি এসেছে, সেটা কিভাবে হলো সেটা জানতে চেয়েছি। অভিযুক্ত লোকদের অপসারণের কথা বলেছি। বলেছি চুক্তি ভিত্তিক কিছু নিয়োগ বাতিল করার জন্য। যারা পদন্নতি বঞ্চিত হয়েছে এতো বছরে তাদের ভুতাপেক্ষ পদন্নতি দেওয়ার কথা বলেছি। দলকানা বিচারক অপসারণের কথা বলেছি। হত্যা-দুর্নীতি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে যাদের আটক করা হচ্ছে তাদের আবার জামিন দেওয়া হচ্ছে, এটা উদ্বেগজনক।
বিগত সরকার ঘনিষ্ট অনেকে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন, এবিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন: আমরা দেখতে পাচ্ছি কিছু রাজনীতিবিদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা কিভাবে পালাচ্ছে, কাদের সহায়তায় পালাচ্ছে তা খুঁজে বের করার জন্য বলেছি। ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান ভারতে বসে থেকে ক্যাম্পেইন করছে, এটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে তারা ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলবে।
সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত প্রচারণা ইস্যুতে তিনি বলেন: দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সকলে না কিছুসংখ্যক সনাতনি মানুষ পরিকল্পিতভাবে জনগণকে উষ্কে দিচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বলছে, হিন্দু কমিউনিটির ওপর এখানে অত্যাচার চলছে, নির্যাতন হচ্ছে। যেটা সর্বৈম্য মিথ্যা। এটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি। একথাগুলো আমরা অত্যান্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য বলেছি।
সংলাপে অংশ নেওয়া বিএনপির অন্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এতে সরকারের দিক থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কয়েকজন উপদেষ্টাও উপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।