পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনকে লন্ডনে অভ্যর্থনা
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মে ২০১৯, ৯:২৬ অপরাহ্ণলন্ডন: বাংলাদেশ সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট -১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড.একে আব্দুল মোমেন লন্ডন পৌঁঁছেছেন।রাশিয়া থেকে তিনি সরাসরি লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌছান।
মঙ্গলবার লন্ডন স্থানীয় সময় রাত ৯ টার কিছু পরে স্বপরিবারে তিনি সেখানে পৌছান।
এ সময় হিথ্রো বিমানবন্দরে মন্ত্রীকে স্বাগত জানান যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম,যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সহ যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে মন্ত্রী গরাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।গত ৩০ এপ্রিল মস্কোতে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও গত ৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এর সঙ্গে বৈঠকের তিন সপ্তাহের মাথায় তিনি এ বৈঠক করতে যাচ্ছেন। বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রোহিঙ্গা ইস্যু, জ্বালানি খাতে সহযোগিতা ও বাণিজ্য অগ্রাধিকার সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এই প্রকল্পের মোট ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার খরচের ৯০ শতাংশই দেবে রাশিয়া; বাকি ১০ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন ঠিক পথেই এগুচ্ছে। আমরা আশা করি, প্রথম ধাপের ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের কাজ ২০২৩ সালে সম্পন্ন হবে।’ তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আমরা চার মাসের মতো পিছিয়ে আছি, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সাক্ষাতে গোটা কাজটি আরও দ্রুত শেষ করার জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ করা হবে। কারণ, প্রতিদিনের জন্য এই প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক বেশি।’
রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গভীর। তাই রাশিয়ার সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের সহায়তা চাবো, যাতে করে রোহিঙ্গারা নিরাপদে রাখাইনে ফিরে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশের জাতীয় স্বার্থ আছে, আমাদের চেষ্টা থাকবে রাখাইনে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য, তাদের সমর্থন আদায়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।’
রাশিয়ার জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম বাংলাদেশে কাজ করছে এবং দেশের প্রায় ৮ ভাগ গ্যাস এই কোম্পানি সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে আরও সাতটি গ্যাস কূপ করার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমরা কাজ করে খুশি এবং এই খাতে আমরা আরও রাশিয়ান বিনিয়োগ চাই।’
বাপেক্স রাশিয়ান কোম্পানির অংশীদার হিসাবে কাজ করে থাকে এবং তারাও জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগ করে।
রাশিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্থান, কিরগিজস্তান ও আর্মেনিয়া মিলে ইউরেশিয়া ইউনিয়ন জোট গঠন করেছে এবং ওই দেশগুলোতে বাংলাদেশ বাণিজ্য সুবিধা চায়।
এ বিষয়ে অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই জোটের কোনও একটি দেশে বাণিজ্য সুবিধা পাওয়ার জন্য ইউরেশিয়া ইউনিয়ন সচিবালয়ের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হবে। এই দর কষাকষি শুরু করার জন্য আমরা একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছি এবং আশা করছি, এটি খুব শিগগিরই স্বাক্ষর হবে।