যখন তখন নৌকার পালে হাওয়া ।। দু’ছাত্রনেতার ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মার্চ ২০১৯, ৩:৪০ পূর্বাহ্ণবিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম।।
বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আতাউর খানের প্রচারণায় যে গতি থাকার কথা ছিল তা এখনো চোখে পড়েনি। দলের একশ্রেণীর বিশ্বাসঘাতক ও মস্তাক অনুসারীদের কৌশলের কাছে তিনি অনেকটা পরাজিত হওয়ার খবর রটেছে।
তবে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী আশাবাদী, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও উন্নয়নের প্রতীক নৌকার পালে যেকোন সময় হাওয়া লাগতে পারে। বিগত উপজেলা নির্বাচনেও ডুবন্ত নৌকা নেতাকর্মীর ৪-৫ দিনের প্রচেষ্টায় বীরের বেশে তীরে ভীড়তে সক্ষম হয়েছিল।
আগামী ১৮ মার্চ অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রতীক ফ্যাক্টর হিসেবে দাঁড়াচ্ছে না। তারপরও নৌকা প্রতীকের প্রতি অগণিত সাধারণ ভোটারের ভাবাবেগ জড়িত রয়েছে। তাছাড়া প্রতীকটি সকলের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। এ অবস্থায় প্রতিদ্ব›িদ্ব অপর প্রার্থীদের নাম জানা থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ের ভোটারের কাছে তাদের প্রতীকটি পরিচিত করে তুলতে একটু বেশি দৌঁড়ঝাপ দিতে হচ্ছে। এমনকি যেকোন সেন্টারে নৌকার কয়েকশ’ নিজস্ব ভোট রয়েছে। সেখানে নৌকার সমান ভোট পেতে হলে একেক প্রার্থীকে কঠোর পরিশ্রম ও কাচা টাকা বিলাতে হবে। এ হিসেবে সকল মতানৈক্য ভুলে বঙ্গবন্ধুপ্রেমীক জনতা জেগে উঠলে ভোটের হিসেব যখন তখন পাল্টে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্রমতে, বিয়ানীবাজারে নৌকার মাঝি আতাউর রহমান খান সরল প্রকৃতির লোক। তাঁর কর্মগুণের জন্য চিরস্থায়ী শত্রæ নেই বললেই চলবে। কিন্তু অতিশয় সরল হওয়াতে কতিপয় ব্যক্তি তাঁর শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ করেছেন। এজন্য আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী আতাউর খানের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। যার ফলাফল আতাউর রহমান খান এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। তবে সকল মানদন্ডে নৌকার প্রার্থী আতাউর খান প্রতিদ্ব›িদ্ব অপর প্রার্থীদের চেয়ে অগ্রসর হওয়ায় যেকোন সময় তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে পারে। এমনটাই ভাবছেন উপজেলার হাজার হাজার নৌকাপ্রেমী ভোটার জনতা।
এদিকে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য শনিবার ছাত্রলীগের দু’নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। পাঠকদের জন্য তাদের স্ট্যাটাস হুবহূ নিম্নে তুলে ধরা হলো-
বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সামাদ আহমেদ শনিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
শিরোনাম হলো- ‘বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন? কেন নৌকায় নয়? কেন আতাউর রহমান খানকে নয়?’
এতে তিনি লিখেছেন, ‘অভিমান, অভিযোগ একপাশে সরিয়ে একবার ভেবে দেখুন, আতাউর রহমান খান গত পাচ বছরে কাউকে কোন মিথ্যা মামলায় ফাসাননি, কারো জমি দখল করেননি, মটর সাইকেল চুরির সিন্ডিকেটের সাথে কখনই জড়িত হননি, কোন নির্বাচনী এলাকার ভোট কূটকৌশলের মাধ্যমে ২০ বছর আটকে রাখেননি, মানুষকে ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত করেননি।’
সামাদ উল্লেখ করেন, ‘আতাউর রহমান খানের উপর রাগ করে আপনারা যাদের ভোট দিতে চাইছেন, তাদের হাতে যদি ক্ষমতা যায় তবে পরিনাম ভয়াবহ নিশ্চিত। ক্ষমতাহীন অবস্থায়ই তারা বিয়ানীবাজারে খুন, রাহাজানি, ডাকাতি, চুরি ইত্যাদির ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া। যদি ক্ষমতা যায় তবে আর কে আটকায়।’
‘আতাউর রহমান খান আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান থাকাকালীন অবস্থায় চাইলেই গ্রুপ-উপগ্রুপ সৃষ্টি করতে পারতেন, সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলতে পারতেন কিন্তু তিনি তা করেননি।এজন্য উনার উপর আমাদের কষ্ট আছে।’
তিনি লিখেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা চেয়ারম্যান ইত্যাদি ক্ষমতাধর পদ-পদবী না-থাকা সত্তে¡ও আতাউর রহমান খানের নির্বাচনী প্রতিযোগীরা গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বলয়, সন্ত্রাসী বাহিনী, চুর-ডাকাত বাহিনী, মটর সাইকেল চুরির সিন্ডিকেট। মদের আখড়া, গাজার আখড়া ইত্যাদি।’
‘সমগ্র বিয়ানীবাজার জুড়ে এদের অনেকেরই ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একদল বখাটে, মারমুখী,মাদকসেবি ইভটিজার।’
‘অথচ আতাউর রহমান খান এসব দুর্নীতি, দলাদলি না-করে দলের জন্য কাজ করে গেছেন।রাজনৈতিক নেতাদের নামে অনেক বদনাম থাকে।আতাউর রহমান খানের নামে ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো অনেকগুলো বদনাম আছে, এগুলো নিতান্তই হিংসাপরায়ণ হয়ে সমাজে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।’
সামাদ আহমদের বর্ণনামতে, আতাউর রহমান খানের কাছে যেই এসেছেন তিনি তার জন্য কিছু করার চেষ্টা করবছেন(যদিও উপজেলা চেয়ারম্যানের তেমন কোন ক্ষমতা নেই), না-পারলে ক্ষতি করেননি।এবার নির্বাচনে যারা উনার প্রতিযোগী তারা সরাসরি কিছু সংখ্যক মানুষের নেতা, চোর-ডাকাত, ভূমি দখল সিন্ডিকেটের মূল হোতা। সরাসরি এসমস্ত সন্ত্রাসীদের মদদ দাতা।’
‘মুখোশের আড়ালে,আলখাল্লার আড়ালে লুকিয়ে থাকা জলজ্যান্ত শয়তানদের আসল পরিচয় জনগণের সামনে তুলে ধরাই এখন কর্মীদের আসল কাজ।’
তিনি বলেন, আতাউর রহমান খান শতভাগ পরিপূর্ণ নন একথা সত্য।তবে এবার উপজেলা নির্বাচনে যারা আতাউর রহমান খানের প্রতিযোগি তাদের চাইতে শতগুণ ভাল।’
‘বিচার আপনার কাছে, আপনার বিবেকের কাঠগড়ায় বিচার করুন, ভেবে দেখুন।উপরে যে দোষগুণ তুলে ধরেছি তা যাচাই করে দেখুন। অন্যর কথায় কান না-দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।’
তিনি আরো লিখেন, ‘যারা কথায় কথায় অভিযোগ করে চোখের জল ফেলে ভোট চায়, মুখোশ এবং আলখাল্লার আড়ালে যারা নিজেদের চরিত্র লুকিয়ে রেখেছে, তাদের আসল পরিচয় কি তা খুজে বের করার দায়িত্ব জণগনের।তা প্রকাশ এবং মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার দায়িত নৌকার কর্মীদের।’
‘নৌকায় ভোট দিন।যদি আপনি জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে থাকেন।আর যদি ভাইয়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দল করেন তবে কথা নেই।’
জয় বাংলা।
সামাদ আহমেদ।
সাবেক কর্মী, বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগ।


এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ছিদ্দিকুর রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রেরিত পোস্টে লিখেন–
‘প্রিয় সহযোদ্ধা
মুজিবীয় শুভেচ্ছা।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে জয় বাংলা–জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে আমরা যারা প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি করি, তাদের আদর্শিক দায়িত্ব নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করা। ইতিহাস স্বাক্ষী ৫৪ ও ৭০’র নির্বাচন থেকে ২০১৯ পর্যন্ত নৌকার বিজয়ের মূল হাতিয়ার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। যারা ছাত্রলীগ করে তারা কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তাঁর প্রতীক নৌকার সাথে বেঈমানি করতে পারে না।’
“নৌকা যদি প্রতীক হয়, ব্যক্তি কোন ফ্যাক্টর নয়”
ব্যক্তি হয়তো একদিন থাকবে না কিন্তু প্রতীক ঠিকই থাকবে। তাই আসুন নৌকায় জোয়ার তুলে মাঠে-ঘাটে, অনলাইনে সর্বদা প্রচার করি ১৮ তারিখ সারাদিন নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’
‘জয় বাংলা–জয় বঙ্গবন্ধু।’