বিমান ছিনতাইকারী পলাশের দ্বিতীয় স্ত্রী নায়িকা সিমলা!

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১:০৮ অপরাহ্ণবিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম।।
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ ছিনতাইকারী কথিত মাহাদীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম মাহমুদ পলাশ (২৪)। ঢাকাই চলচ্চিত্রে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা সিমলা তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছে পলাশের পরিবার।
এবিষয়ে জানতে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সিমলার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের পি আর জাহানের ছেলে পলাশ।
জানা গেছে, ২০১১ সালের দিকে স্থানীয় তাহিরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে। এরপর সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি।
পলাশের বাবা ১৯৯০ সাল থেকে বিদেশে থাকতেন। প্রথমে কুয়েত এবং পরে সৌদি আরবে ছিলেন তিনি। প্রবাসী বাবার দেওয়া টাকা-পয়সা নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন পলাশ। এর মধ্যে নাচগান থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র শিল্পে জড়ান তিনি। কয়েকটি শর্টফিল্মও তৈরি করেন বলে জানায় পরিবার।
একটা সময় বাসা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন পলাশ। বাড়িতে তেমন যেতেন না। মাঝে মধ্যে টাকার প্রয়োজন হলে বাড়ি যেতেন।
পলাশের বাবা পি আর জাহান বলেন, গত ২০-২৫ দিন আগে বাড়িতে আসে পলাশ। সাধারণত বাড়িতে সে এত দিন থাকতো না। গত ২০-২৫ দিনে অনেকটা পাল্টে যায় সে। মসজিদে যাওয়া-আসা করে, এমনকি আজানও দিয়েছে।
তিনি জানান, গত শুক্রবার বাসা থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তার মাকে বলে যায়- ভ্রমণ ভিসায় আমি দুবাই যাচ্ছি।
তবে দুবাই যাওয়ার বিষয়ে বাবাকে কিছু বলেননি পলাশ।
পলাশের বাবা আরও জানান, প্রায় ১০ মাস আগে চিত্রনায়িকা সিমলাকে বাড়িতে নিয়ে আসে পলাশ। বাবা-মায়ের সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেয়। সিমলার সঙ্গে তাদের কথাও হয়।
তিনি বলেন, এক-দেড় মাসের ব্যবধানে দু’বার আসে পলাশ ও সিমলা। দ্বিতীয়বার এসে পলাশ বলেছে- আমি সিমলাকে বিয়ে করেছি। সিমলাও বিষয়টি স্বীকার করেছে।
পি আর জাহান বলেন, “আমি সিমলাকে তখন বলেছি- তোমার সঙ্গে বয়সের এত ব্যবধান, কীভাবে আমার ছেলেটাকে বিয়ে করেছো? যাহোক বিয়ে যেহেতু করেই ফেলেছো, আমার ছেলেটা যাতে ভালো হয়ে যায় একটু খেয়াল রেখো।”
তিনি জানান, পলাশের মা রেনু আক্তারের সঙ্গে এরপর তিন মাসের মতো সিমলার কথাবার্তা ও যোগাযোগ হয়। পরে আর যোগাযোগ হয়নি। হয়তো সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল।
পলাশের বাবা বলেন, বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে প্রথমে তারা কিছুই জানতেন না। পরবর্তীতে তারা ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন।
তিনি বলেন, “সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ রাতে তাদের বাসায় এসে একটি ছবি দেখিয়ে জানতে বলেন- এটা আপনার ছেলে কিনা। পরে দুবাই যাওয়ার বিষয়টি এবং ছবি মিলে যাওয়ায় পলাশের পরিচয় নিশ্চিত হই।”
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদর উপজেলার সাতমাথা ভাইপাগলা মাজারের পাশে পলাশ ২০১৪ সালে মেঘলা নামে একজনকে বিয়ে করেন। তাদের আড়াই বছর বয়সী আয়ান নামে একটি সন্তানও আছে। মেঘলা বগুড়ার স্থানীয় নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপালের মেয়ে। তার বাবা বগুড়ায় আইন পেশায় জড়িত।
প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ রোববার ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়।
কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন। টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল।
এর আগে উড়োজাহাজটি থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় বিমানবন্দর এলাকায় ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। এ ঘটনায় সাতটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত ১০টার দিকে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়।