সিলেট: সিলেটের সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আমীনূর রশীদ চৌধুরীর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৫ সালের ৩০ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১৯১৫ সালের ১৭ নভেম্বর কলকাতার ৩১ নম্বর জাননগর রোডে জন্মগ্রহণকারী আমীনূর রশীদ চৌধুরীর পিতা বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মরহুম আব্দুর রশীদ চৌধুরী এবং মাতা মরহুমা রাজিয়া রশীদ চৌধুরী। সুনামগঞ্জ জেলার পাগলা পরগনার দূর্গাপাশা গ্রামে ছিল তাদের আদি নিবাস। আমীনূর রশীদ চৌধুরী তার পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান।
কলকাতার বয়েজ স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করা আমীনূর রশীদ চৌধুরী সিলেটের রাজা জিসি স্কুল ও মুরারিচাঁদ কলেজ হয়ে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেন। ছাত্র জীবনেই স্বাধীনচেতা উদার মানসিকতার আমীনূর রশীদ চৌধুরী ১৯২৯ সালে গান্ধী আন্দোলনে যোগদান করেন এবং ১৯৩০ সালে কারাবরণ করেন।
উপমহাদেশের প্রথিতযশা রাজনীতিবিদদের সাহচর্যে তার রাজনৈতিক চেতনা প্রখর ও সুদৃঢ় হয়েছিল। অবিভক্ত ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন তরুণ সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি দফায় দফায় কারাবরণ করেছেন এবং শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কারণে পাকবাহিনী ’৭১-এ তাকে সিলেট রেসিডেন্সিয়াল পাবলিক স্কুলে ১৩০ দিন বন্দি রেখে অমানবিক নির্যাতন করে এবং তার সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে।
সততা ও মানবিকতার আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে তিনি সংযুক্ত হয়েছেন বহু সামাজিক কাজে। সিলেট মহিলা কলেজ, তিব্বিয়া কলেজ, সিলেট ল’ কলেজ, সিলেট প্রেসক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ সিলেটের সার্বিক স্বার্থ রক্ষা, ভাষা, সংস্কৃতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অনন্য ও সর্বজনগৃহীত।
সিলেটের প্রাচীনতম পত্রিকা ‘যুগভেরী’ তার হাত ধরে সম্পূর্ণরূপ ধারণ করে। ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত পত্রিকার দায়িত্ব তিনি ১৯৬০ সাল হতে সম্পূর্ণরূপে পালন করতে শুরু করেন। সিলেটে সংবাদপত্র তথা সাংবাদিকতার সেটি ছিল একই সাথে প্রারম্ভিক এবং স্বর্ণযুগ। উল্লেখ্য, ‘যুগভেরী’ নামকরণও করেন তিনি।