বেহাল সড়ক, সাঁকো দিয়ে পারাপার!

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০১৯, ১১:১৮ পূর্বাহ্ণজাহাঙ্গীর আলম খায়ের, বিশ্বনাথ: সর্বশেষ ২০১৫ সালে সংস্কার হয়েছিলো সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ-সিঙ্গেরকাছ সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারহীন থাকায় এই সড়কের অবস্থা এখন একেবারেই বেহাল। সড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণের ফলে সড়কটির অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।
বাড়িঘরের কারণে বৃষ্টির পানি সড়ক থেকে নামতে পারে না। ফলে সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় গর্তের। বৃষ্টির মৌসুমে এইসব গর্তে জমে থাকে পানি। সড়কের বৈরাগীবাজার ও রহমান নগরসহ একাধিক স্থানে বড় বড় গর্তগুলো জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
ঝুঁকি এড়াতে বাস, মিনিবাস, মাউক্রোবাস ও সিএনজি চালিত অটো রিকশার চালকরা যাত্রীদের নামিয়ে গর্ত পার হন। দীর্ঘ একমাস যাবত চলছে এই অবস্থা। আর সড়কের রহমাননগর এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়কে বাঁশের সাঁকো বসিয়ে পারপার হতে হচ্ছে।
শুধু বিশ্বনাথ-সিঙ্গেরকাছ সড়কই নয়, বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর, বিশ্বনাথ-বাইপপাস সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে এভাবে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে সড়কগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা করা না হলে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপশি দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানীরও আশংকা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে বিশ্বনাথ উপজেলা প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, সড়ক সংস্কারে আবারও দরপত্র আহবান করা হচ্ছে। এরআগেও একবার টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র নেন নি। আগামি নভেম্বর মাস নাগাদ সড়কগুলো সংস্কার করার আশাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে তারা জরুরী সংস্কার হিসেবে বড়বড় গর্তগুলো ভরাটের ব্যবস্থা করেছেন এবং দ্রুত এ কাজ সম্পন্ন করা হবে।
তবে, ইউএনও অমিতাভ পরগাত তালুকদার উপজেলা পরিষদের বরাদ্ধ থেকে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে জানালেও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেছেন, উপজেলা পরিষদের ফান্ডে কোন টাকা নেই। তাই তিন জায়গায় বরাদ্ধ চেয়ে আবেদনের পর এলজিইডির বরাদ্ধ পাওয়ায় গর্ত ভরাটের কাজ করা হচ্ছে।
সরেজমিন বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কের মিয়ারবাজার, বিশ্বনাথ-বাইপপাস সড়ক ছাড়াও উপজেলার ১৪/১৫টি গ্রামীণ সড়কেরও বেহাল দশা। উপজেলার যান চলাচলের অনুপযোগী সড়কের মধ্যে রযেছে- বিশ্বনাথ-হাবড়া-ছালিয়া সড়ক, কালিগঞ্জ-মনাইকান্দি সড়ক, কালিগঞ্জ-দাউদপুর-সমসপুর সড়ক, কালিগঞ্জ-বরইগাঁও-সদুরগাঁও সড়ক, বিশ্বনাথ জানাইয়া-খাজাঞ্চি সড়ক, বিশ্বনাথ-কুরুয়া বাজার-সরোয়ালা সড়ক, রামপাশা-রাজাগঞ্জবাজার সড়ক, গুলচন্দবাজার-ভুরকি-মুঞ্চিরবাজার- সোনালী বাংলাবাজার-সিঙ্গেরকাছ সড়ক, দশপাইকা-হাবড়া-বাগিচা সড়ক, বাগিচা-কজাকাবাদ সড়ক, পীরেরবাজার কালভার্ড থেকে ধরারাই-গাজির মোকাম সড়ক।
গর্তগুলোতে আরসিসি ঢালাই দেওয়ার দাবি করে গোহরি গ্রামের বাসিন্দা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসলামুজ্জমান বলেন, কাপড় ভিজে যাওয়ার কারণে দীর্ঘ একমাস ধরে সিঙ্গেরকাছের কাজিরগাঁও হয়ে অতিরিক্ত ১০কিলোমিটার ঘুরে সকাল-বিকাল তাকে নিজ কর্মস্থল কামালপুরস্থ প্রিন্সিপল উমেন্স মহিলা কলেজে যেতে হচ্ছে।
রহমনানগরের বাসিন্দা ও উপজেলা সুজনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কবি সাইদুর রহমান সাঈদ আরসিসি ঢালাই দাবি করে বলেন, গ্রামের লাল মিয়া, আলতাব আলী ও নুর উদ্দিন সড়কের পাশে দেয়াল নির্মাণ করে তাদের বাড়ির সীমানা আলগানোর কারণে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় সড়কের মাঝখানে পুকুরের মত বড়বড় গর্ত হয়েছে। যে কারণে পাকা ওই সড়কে সাঁকো দিয়েই তাদের চলাচল করতে হচ্ছে।
ইনছান আলী নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, গত শনিবার না জেনে রিজার্ভে যাত্রী নিয়ে সোনালী বাংলাবাজার যান তিনি। আসার পথে আবারও যাত্রী নামিয়ে রহমান নগরের বড় বড় গর্ত পার হন। কিন্তু যাত্রীরা সাঁকো পেরিয়ে গেলেও তার অটোরিকশাটি পানিতে ভিজে বিকল হয়ে যায়। -সিলেটটুডে