শহরে-মফস্বলে ভালোবাসা

বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:৪১ পূর্বাহ্ণসোহান আহমদ।।
ভালোবাসা কাল-পাত্র ভেদে ভিন্ন! ভালোবাসা রং না থাকলেও অনুভূতি আছে। ক্ষেত্রভেদে অনুভূতিগুলো মধুময়, তেতুময় নয়তো তিক্তময়! ভালবাসায় কোন গণ্ডি নেই, সে গন্ডহীন।
সে উন্মুক্ত ও নগ্ন। বৃহত্তর অর্থে ভালোবাসা কথা চিন্তা করতে এর পরিধি শাখাপ্রশাখা কথা বলে শেষ করার মতো নয়! ভালোবাসা হচ্ছে খোলা আকাশের মতো।
খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে যদি দূরপ্রান্তের দিকে তাকান তাহলে মনে হয়! এই তো সেখানেই বুঝি আকাশ এই ভূমি স্পর্শ করেছে।
যেখানে গেলে মনে হয়েছিল আকাশ মাটি স্পর্শ করেছে সেখানে গেলেও একই উপলব্ধি করতে হবে।কিন্তু আকাশ কি মাটিকে ছোঁয়? মাটিতে পা রেখে আকাশ ছোঁয়া যায় না? ঠিকই ভালোবাসা এ এমন।আবেগী না হলে ভালোবাসাকে ছোঁয়া যায় না।
ভালোবাসাকে যত্নে নরম পরেশের মিষ্টু ধুলো দিয়ে ডেকে রাখতে হয়।আগেই বলেছি ভালোবাসা সংজ্ঞা
লিখে শেষ করা যাবে না,যেমন পিতা-মাতার প্রতি সন্তান এর ভালোবাসা। ভাইয়ের প্রতি বোনের, প্রেমিক এর প্রতি প্রেমিকা, আবার প্রানীর প্রতি মানবকূলের। তবে আজকের এই বিংশ শতাব্দীর যুগে যুবক-যুবতীদের কাছে ভালোবাসা ‘মানেই যুগলবন্দীকে বোঝায়। আর সেটাও না ভাবারও তেমন একটা কারণ নেই।
প্রযুক্তির যুগে কি কেউ আর প্রকৃতি প্রেমী,বই প্রেমী, খেলাপ্রেমী হতে চায়? স্রোতে বিবর্তনে ভালোবাসাও বিভিন্ন চ্যালেজ্জিং ধাপ অতিক্রান্ত করে আজ এ পর্যন্ত! দখল তো আর কমও যায়নি?
এই অতিক্রান্ত যেন ক্লান্ত হয়ে না পড়ে অজস্র প্রেমীকজুটির ভীড়ে সেটাই আজকের প্রশ্ন?আগেই বলেছি পাত্র ভেদে ভালোবাসা ও ভিন্ন! যেমন ধরেন
শহরের প্রেমগুলো যেন পাঁপড়ের মতো। পাঁপড় ভাজা যত মচমচেই হোক, সেটা কিন্তু খুবই ভঙ্গুর। একটু চাপ দিলেই গুড়মুড় করে ভেঙে যায়।
কারণ সেখানেই জীবনযাত্রা মানের রূপের উপায়ে ভালোবাসাকে বেশি প্রভাবিত করে তা ছাড়া সেখানে স্বাধীনতাও বেশি আপনি সেই স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ করলেই এই ভালোবাসা মসকে যায়।
মফস্বলের যুগলবন্দী হতে হলে তরুণী -তরুণীদের বিভিন্ন অগ্নি পরীক্ষায় সম্মুখীন হয়ে ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তা ছাড়া কথায় কথায় বিজ্ঞাপনের নিচে খুব ছোট করে শর্ত প্রযোজ্য লেখার মতো ভালোবাসা শর্ত জুরা থাকে।
তবেই এখানে শর্তটাই পুরো ভালোবাসায় বৃহৎ বিজ্ঞাপন। তাই এখানে ভালোবাসা সহজেই যেমন আবদ্ধ হয়না আবার সহজেই সমাপ্তি পথ খুঁজেনা।তবে সবক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান যে সঠিক তারও নিশ্চয়তা নেই। শহরে একটি উৎসবকে যুগলরা এক একটি অধ্যায়ের মতো রূপান্তর করলে বা সূচনা করে স্মরণীয় রাখে। মুফস্বলে তা একেবারেই নেই বললেই চলে।
তবে গোপনে-গোপনে সঙ্গীপনে তা যে হয়ও না সেটা কিন্তু না।মফস্বলের ভালোবাসা যদিও না দিবসে রংধনু বিভিন্ন রংএর বেশে না বদলালেও ভালোবাসা বিন্দু মাত্র মরিচা ধরে না। রাসায়নিকর ভাষায় বলতে গেলে মফস্বলের ভালোবাসা ফরমালিন মুক্ত জৈবিক! ভালোবাসার সঙ্গে আত্মার যেমন সম্পর্ক।তাও দেহের একটা সম্পর্ক থেকেই যায়।
দেহতো আর আত্মার বাহিরেও নয়। এই চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপার গুলো শহর কিংবা মফস্বল সব জায়গাই একই ব্যাখার বন্দী! কারণ আত্নাহীন দেহ আর দেহহীন আত্মা দু’টি কার্যহীন।বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে আমরাও একটি কার্যদিবসকে “ভালোবাসা” দিবস হিসাবে মূল্যায়ন করি। যদিও ভালোবাসতে দিন, ক্ষণ, রৌদ্র, বৃষ্টির প্রয়োজন হয়না। তবে বিশেষ রোমান্টিকতার একটি বিষয়ের এর সাথে জড়িত রয়েছে।
তাই ১৪ ফ্রেব্রয়ারী ভালোবাসা দিবস হিসাবে এতো নাককষাকষি এলাকাহীন! হয়তো এলাকা যুক্ত মাত্তবল কেন? সবার মনন তো আর একও নয় সেটাও একটি উত্তর।
এই দিবস নিয়ে মজার কিছু বিষয় আছে। সোশ্যালিটি একটি ব্যাপার আছে বলে শহরে প্রেমিকরা যখন ফুলহাতে কিংবা প্রেমিকার হাত ধরে তেপান্তরের হারানোর ফেবু লাইভে এসে কথা বলছে। তখন মফস্বলের যুগলজুটি ফেবুতে ফতুয়া দিতে ব্যস্ত। তবে ইনবক্সে তাদের সামাল দেয় কে?
মফস্বলের সামাজিকতার কঠোর হওয়া যুগলরা এক সাথে কথা বলা তো দূরে থাক ঘর হতে বেরুতেই যায় না। কি হবে একটি দিনের জন্যে ঘর হতে বের হয়ে? নিজেই নিজেকে সন্দেহ চোখে ফেলবেই বা কেন? এটা এক ধরনের চতুরতা বলতে পারেন। এক সঙ্গে বসে বা হেটেঁ কফির চুমুকে নয়তো চায়ের চুমুকে, কলেজ ক্যাম্পাসে বা ফাস্টফুডের দোকানে ভালোবাসা বিনিময় না হলেও রসাত্মক ক্ষুদে বার্তায় এই দিনের পূর্ণতা খোঁজ নেওয়া চেষ্টা তো আছে।
ভালোবাসায় সফলতায় বা ব্যর্থতার গল্পে বলবো ভালোবাসাই তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখেন। কারণ ভালোবাসা আমার না হলেও তো আপনার হয়।আপনার না হলে তো তারই হয়। সুতরাং বিজয়ের আগে ভালোবাসা জয় এটা সুনিশ্চিত। ভালোবাসা একটি ফ্রেম!
যুগলবন্দীদের এই ফ্রেম হারিয়ে গেলে ভালোবাসা নতুন ফ্রেমে আবদ্ধ হয় বহুমাত্রিকতা নিয়ে তার আপনপনে।
পরিশেষে বলতে চাই শুদ্ধ মনের জয় হউক পরিশুদ্ধ ভালোবাসাকে নিয়ে।