স্বপ্নের লন্ডন যেতে ‘উইন্ডরাশ স্কিম’ নিয়ে সিলেটে চলছে তুঘলকি কারবার
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুন ২০১৯, ৮:২২ পূর্বাহ্ণমুহাম্মদ তাজ উদ্দিন: স্বপ্নের লন্ডন যেতে ‘উইন্ডরাশ স্কিম’ নিয়ে সিলেটে চলছে তুঘলকি কারবার। যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাতে ইচ্ছুক সিলেটের একটি বড় অংশের সরলতাকে পুঁজি করে একটি সংঘবদ্ধ আদম পাচারকারী হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে বৃটেন সরকারের শুরু করা এই প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাজ্যে যাওয়া যাবে- এমন খবর প্রচার হওয়ায় বুঝে না বুঝে অনেকেই চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন আদম ব্যবসায়ীদের সাথে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘উইন্ডরাশ’ স্কিমের আওতায় ভিসা পাইয়ে দেবার নাম করে আগ্রহী লোকজনের কাছ থেকে জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। অথচ, এই স্কিমের আওতায় যোগ্য প্রার্থীকে কোন ফি-ই দিতে হবেনা।
চলতি বছরের ৩১ অক্টোবরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার অর্থাৎ বেক্সিট কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে বৃটেন। বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, ব্রেক্সিটের কারণে বৃটেনের জনবল সংকটের কারণে এই উইন্ডরাশ স্কিমে ভিসা পাওয়া যাবে বলেও প্রচারণা চালাচ্ছে একটি অসাধু চক্র।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা ১৯৭২ সালের আগে পিতা মাতার সাথে যুক্তরাজ্যে ছিলেন, বা যাদের জন্ম যুক্তরাজ্যে হয়েছে, তারাই কেবল উইন্ডরাশ স্কিমের আওতায় যুক্তরাজ্যে যেতে পারবেন। এই স্কিমের আওতায় আবেদন করতে হলে প্রকৃত প্রার্থী হিসেবে নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে অবহিত হওয়া প্রয়োজন বলে অভিমত দিয়েছেন তারা। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের নাগরিকসহ কমনওয়েলথভুক্ত যে কোন দেশের নাগরিক এই স্কিমের আওতায় আসবেন।
যুক্তরাজ্যের হোম সেক্রেটারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) সাজিদ জাবেদ জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে ‘উইন্ডরাশ স্কিম’ চালু হওয়ার পর চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী ২৪ জন বাংলাদেশীকে এই স্কিমের আওতায় ভিসা প্রদান করা হয়েছে। ভিসা লাভকারী এই ২৪ জনের প্রায় সবাই সিলেটের নাগরিক বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
‘উইন্ডরাশ’-ইতিহাসের দীর্ঘশ্বাস
১৯৪৮ সালের ২২ জুন এমভি এম্পায়ার উইন্ডরাশ নামের একটি জাহাজ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ ত্রিনিনাদ-টোব্যাগো ও জামাইকা থেকে ৪৯২২ জন যাত্রী নিয়ে যুক্তরাজ্যের এসেক্স শহরের টিলবারি ডকে এসে নোঙ্গর করে। তখন বৃটেনে চলছিল চরম শ্রমিক সংকট। এই সংকট মোকাবেলার জন্য বৃটিশ সরকার-ই যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে এদেরকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসে। এই শ্রমিকদের সাথে এসেছিল তাদের পরিবারও। এই পরিবারগুলোর অনেক সদস্যই ছিল শিশু বা যাদের বয়স ছিল ১৮ বছরের নীচে। এরা যুক্তরাজ্যে এসে সে দেশের বিভিন্ন কলকারখানা ও শিল্পে শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন।
পরবর্তীতে বিশ্বের আরো বিভিন্ন দেশ থেকে এভাবে আরো অনেকেই শ্রমিক হিসেবে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে আসেন। এ ধারা অব্যাহত ছিল ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে বৃটিশ সরকার শ্রমিক হিসেবে আসা এই পরিবারগুলোকে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ করে দিয়েছিল। এ কারণে শ্রমিক-পিতা মাতা যখন ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন’ বা স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন, তাদের সন্তান সন্ততিরাও সে সুযোগ পেয়ে যান স্বাভাবিকভাবে। এই জনগোষ্টি-ই পরবর্তীতে ‘উইন্ডরাশ জেনারেশন’ নামে বৃটেনে পরিচিতি পায়।
কিন্তু, অজ্ঞানতার কারণে বা আইন না জানার কারণে এই সব শিশুদের অনেকেই সে সময় নিজেদের পাসপোর্ট ‘এনডোর্সমেন্ট’ করেননি বা বৃটেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেননি। যুক্তরাজ্যে তাদের বসবাসে বা চিকিৎসায় বা কাজের ক্ষেত্রে তাদেরকে কোনরূপ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়নি বলেই তারা এটি করার প্রয়োজন মনে করেননি।
২০১০ সালে বৃটিশ হোম অফিস এই লোকদের ‘ল্যান্ডিং কার্ড’ অর্থাৎ তাদের যাতায়াতের কাগজাত ধ্বংস করে দেয়। যার ফলে এই ‘উইন্ডরাশ জেনারেশন’-এর অনেকে নিজেদের দেশ থেকে আর বৃটেনে ফিরে আসতে পারেননি। কারণ, তাদের অনেকেই বৃটেনের পাসপোর্ট গ্রহণ করেননি। অনেকের নাম বাবা-মা’র পাসপোর্টে এনডোর্স করেননি বা অনেকে ‘আন ডকুমেন্টেড’ রেসিডেন্ট’ হিসেবে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেছিলেন।
২০১২ সালে এসে এই উইন্ডরাশ জেনারেশনকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়। এ সময় বৃটেনের ইমিগ্রেশন পলিসিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ঐ সময় বৃটেনের হোম অফিস নিয়ম প্রবর্তন করে যে, কেউ যুক্তরাজ্যে বাড়ি ভাড়া করতে হলে বা চিকিৎসা নিতে হলে কিংবা বেনিফিট বা রাইট অব ওয়ার্ক ক্লেইম করতে হলে তাকে অবশ্যই নিজের নাগরিকত্বের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু, ‘উইন্ডরাশ’ জেনারেশনের একটি বড় অংশ এ ধরণের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হন। ফলে, যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা (এনএইচএস) বা সোশ্যাল বেনিফিটসহ সকল ক্ষেত্রেই উইন্ডরাশ জেনারেশনকে চরম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া, ক্যরিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে অনেকেই আটকা পড়ে যান। অর্থাৎ তাদের কাছে যুক্তরাজ্যে অবস্থানের কোন প্রমাণ না থাকার কারণে তারা আর যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারছিলেন না। কারণ, ততদিনে যুক্তরাজ্যের হোম অফিস আনডকুমেন্টেড লোকজনকে যুক্তরাজ্যে আসার বা সেখানে কাজের সুযোগ কঠোরভাবে বন্ধ করে দেয়।
২০১৭ সালে বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের এই কথিত উইন্ডরাশ জেনারেশনের সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ ৬৭ হাজার। আর যুক্তরাজ্যের নাগরিক নন এমন লোক সংখ্যা আরো প্রায় ৫৭ হাজার। এদের মধ্যে জামাইকার ১৫ হাজার, ভারতের ১৩ হাজার ও অন্যান্য দেশের ২৯ হাজার লোক রয়েছেন। এই ২৯ হাজারের মধ্যে পাকিস্তান, কেনিয়া এবং সাউথ আফ্রিকার লোকজনও রয়েছেন। এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত উইন্ডরাশ জেনারেশনের সুষ্পষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও ভারতের ১৩ হাজার এবং অন্যান্য জাতির ২৯ হাজারের মধ্যে বাংলাদেশীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে ধারণা করা যায়।
‘উইন্ডরাশ জেনারেশন’-এর এসব সমস্যা নিয়ে সবার আগে সরব হন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের লেবার দলীয় এমপি ডেভিড লামি। তিনি-ই প্রথম এই জনগোষ্টির সমস্যা নিয়ে সংসদে বক্তব্য রাখেন। পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যের আইনজীবী সমাজ ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন সরকার ও তার প্রতিনিধিরাও এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ফলে, এক পর্যায়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ক্যারিবিয়ান নেতৃবৃন্দ এবং উইন্ডরাশ জেনারেশনের পক্ষে আন্দোলনকারী জনগোষ্টির কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। সে সময় থেরেসা মে বৈষম্যের শিকার জেনারেশনের সমস্যা লাঘবে ‘উইন্ডরাশ স্কিম’ নামে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণেরও ঘোষণা দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল বৃটিশ সরকার একটি স্কিম ঘোষণা করে যার নাম দেয়া হয়- উইন্ডরাশ স্কিম।
কাদের জন্য ‘উইন্ডরাশ স্কিম’
‘উইন্ডরাশ স্কিম’ মূলতঃ যারা ২০১২ সালে হোম অফিসের নথি বিনষ্টের কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাদেরকেই সুযোগ দেয়ার জন্য প্রবর্তন করা হয়েছিল। এই স্কিমের মূল লক্ষ্য ছিল- যারা ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কমনওয়েলথভুক্ত দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন, তাদেরকে যুক্তরাজ্যে যাবার সুযোগ করে দেয়। এই স্টেক হোল্ডারদের সিংহভাগই হলেন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মানুষ। কিন্তু, এই স্কিমে কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহের অধিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করায় বাংলাদেশীরাও এই স্কিমের আওতায় চলে আসেন। অর্থাৎ, এমন কোন বাংলাদেশী যদি থাকেন যিনি ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কোন সময়ে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন, সেখানে অবস্থান করেছেন, তারা এই স্কিমের আওতায় যুক্তরাজ্যে যেতে পারবেন এবং যুক্তরাজ্যের স্থায়ী নাগরিকত্ব পাবেন। এমনকি, এক্ষেত্রে তাদেরকে কোনরূপ ফিও দিতে হবেনা।
কারা আবেদন করতে পারবেন
বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত বৃটিশ আইনজীবী আবুল কালাম চৌধুরী জানান, যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫টি ক্যাটাগরির লোক এই উইন্ডরাশ স্কিমে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব লাভের জন্য বা যুক্তরাজ্যে যাবার জন্য আবেদন করতে পারবেন। যথা-
(১) ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারীর আগে যুক্তরাজ্য গিয়েছিলেন বা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন অথবা তাদের রাইট অব এবর্ট আছে। অর্থাৎ যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন এমন লোক, যাদের পিতা-মাতা বৃটিশ সিটিজেন ছিলেন অথচ আবেদনকারী বৃটিশ সিটিজেনশিপ পাননি। বৃটিশ পাসপোর্ট নেই, কিন্তু রাইট অব এবর্ট এর আলোকে অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট নিয়ে যুক্তরাজ্যে বা যুক্তরাজ্যের বাইরে বসবাস করছেন-এমন লোকও এই স্কিমের আওতায় বৃটিশ পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন। অর্থাৎ আবেদনকারী ব্যক্তি পিতা-মাতার অবস্থানের সুযোগে কোন না কোন সময় কোন না কোনভাবে যুক্তরাজ্যে ছিলেন- তিনি এ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
(২) ১৯৭৩ সালে ১ জানুয়ারীর আগে যারা যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন কিন্তু তারা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন না বা যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও এখনো যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব পাননি।
(৩) কমনওয়েলথভুক্ত দেশের নাগরিক যিনি বৃটেনে যে কোন সালে জন্মগ্রহণ করেছেন বা বৃটেনে আন ডকুমেন্টেড বসবাস করছেন, কিন্তু তাদের পিতা মাতা ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্যে সেটেলমেন্ট ভিসায় নাগরিকত্ব পেয়েছেন। এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়, পিতা-মাতা যুক্তরাজ্যের নাগরিক হলেও আবেদনকারী যদি যুক্তরাজ্যে বসবাস না করেন তাহলে তিনি উইন্ডরাশ স্কিমের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
(৪) কমনওয়েলথভুক্ত দেশের বাইরের কোন দেশের লোক যিনি ১৯৮৮ সালের আগে যুক্তরাজ্যে এসেছেন এবং এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
(৫) কমনওয়েলথভুক্ত দেশের নাগরিক যিনি ১৯৭৩ সালের আগে এই দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন। কিন্তু, উনার কোন কাগজপত্র নেই অথবা দুই বছরের বেশী সময় বৃটেনের বাইরে থাকার কারণে উহার স্থায়ী বসবাসের অনুমতি বাতিল হয়ে গেছে। এরা রিটার্নিং রেসিডেন্ট হিসেবে বৃটেনের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
উইন্ডরাশ স্কিম : প্রেক্ষিত সিলেট
‘উইন্ডরাশ স্কিমে’ যুক্তরাজ্যে গেছেন- এমন লোকজন সম্পর্কে খুব বেশী তথ্য পাওয়া না গেলেও বাংলাদেশ থেকে আবেদনকারী অন্ততঃ দু’জনের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। এ স্কিমের আওতায় ভিসা লাভকারী এক ব্যক্তির সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার জন্ম যুক্তরাজ্যে। পিতা-মাতার সাথে তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু, ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশে আসার পর একটি মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে আর যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারেননি। সম্প্রতি এই স্কিম চালু হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তার ভাতিজা তার পিতা-মাতার যুক্তরাজ্যে অবস্থান সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। ফলে, উইন্ডরাশ জেনারেশন দাবী করে তিনি ভিসার জন্য আবেদন করেন। যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তার আবেদন যাচাই বাছাই শেষে তার বক্তব্যের সঠিকতা পেয়ে ৩ মাসের মধ্যেই তার নামে ভিসা ইস্যু করেন এক্ষেত্রে তাকে কোন ফি দিতে হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উইন্ডরাশ স্কিমের আওতায় সিলেট থেকে ইতোমধ্যে শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে বৃটেনের হোম অফিসে। তবে, এদের কতজন ভিসা পেয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন–
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী, ইমিগ্রেশন এডভাইজারী সার্ভিসেস (আইএএস), সিলেট অফিসের সাবেক প্রধান ব্যারিস্টার মোজাক্কির হোসাইন এ বিষয়ে দৈনিক সিলেটের ডাক-কে বলেন, ‘উইন্ডরাশ স্কিম’ নিয়ে সিলেটে রীতিমত তুঘলকি কারবার চলছে। সিলেট থেকে এই ভিসায় আবেদন করার জন্য যারা আসছেন, তাদের পিতা-মাতা যুক্তরাজ্যেরও নাগরিক ছিলেন। কিন্তু, আবেদনকারী কোন সময় যুক্তরাজ্যে যাননি। অথচ, ‘উইন্ডরাশ স্কিম’-এর প্রধান শর্ত হলো আবেদনকারী কোন না কোন সময় যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন- এমন প্রমাণ দিতে হবে। সুতরাং, কারো বাবা বা মা যুক্তরাজ্যের নাগরিক ছিলেন সে হিসেবে কেউ এই স্কিমের আওতায় আবেদন করতে পারবেন না। এটি বুঝে আবেদন করতে হবে। এই স্কিমের আবেদনকারীকে কোনরূপ ফি দিতে হবে না যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেন্ট ভিসার জন্য বাধ্যতামূলক লাইফস্কিল টেস্ট দিতে হবেনা। সুতরাং, না বুঝে দালালের খপ্পরে পড়লে বা টাকা পয়সার চুক্তি করলে আখেরে পস্তাতে হবে।
সূত্র: দৈনিক সিলেটের ডাক।