সেই ওসি নিজেই ছাড়েন নুসরাতের ভিডিও
বিয়ানীবাজার বার্তা ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মে ২০১৯, ১২:৩৪ অপরাহ্ণফেনী: ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যাকাণ্ডে মোয়াজ্জেম হোসেন (ওসি)’র দিকে আঙ্গুল উঠে। নুসরাত কীভাবে অধ্যক্ষের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, তার বিবরণ নিজের মুঠোফোনে রেকর্ড করে প্রচার করেছিলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন। বক্তব্য ধারণ করার সময় বিপর্যস্ত নুসরাতকে তিনি বারবার বিব্রতকর প্রশ্ন করেছিলেন।
এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে। আদালতের নির্দেশে করা প্রতিবেদনটি পিবিআই রোববার (২৬ মে) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মোয়াজ্জেম হোসেন ওসি হিসেবে রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকেও নিয়মবহির্ভূতভাবে নুসরাতের বক্তব্যের ভিডিও ধারণ ও প্রচার করে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি ধারায় (২৬, ২৯ ও ৩১) ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে পিবিআই।
পিবিআইয়ের প্রধান পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম থানায় নুসরাতের ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াননি বলে দাবি করেন।
সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য হয়েও নিয়মবহির্ভূতভাবে শ্লীলতাহানির ঘটনার বক্তব্যের ভিডিও ধারণ ও প্রচার করে অপেশাদারত্বের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এতে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গত ২৭ মার্চ বেলা ১টা ১৮ মিনিটে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন দিয়ে থানায় আসা ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের বক্তব্য ধারণ করেন। এতে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির ব্যক্তিগত পরিচিতির তথ্য প্রকাশ পায়। এই অপরাধে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৬ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। মোয়াজ্জেম এই ভিডিও ৮ এপ্রিল শেয়ারইট অ্যাপের মাধ্যমে ‘সজল’ নামের একটি ডিভাইসে পাঠান। এতে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার উপক্রম হয়। এর মাধ্যমে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১ ধারায় অপরাধ করেছেন।