পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছর এই দিনে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে অর্থ উপার্জনের জন্য নূর-নবী খলিফা ও নূর ইসলাম খলিফা নামের দুই দালালের হাত ধরে বিদেশে পারি জমান। নিহত জাকিরকে স্থলপথে তুরস্ক নেওয়ার কথা থাকলেও, দালাল চক্র লিবিয়া নিয়ে আটকিয়ে রাখে। লিবিয়ায় জাকির হোসেনকে আটক রেখে পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন সময় টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই ছেলেকে বিক্রি করে দিবে অথবা না হয় অনাহারে রাখবে বলে হুমকি দিতে থাকে। এ পর্যন্ত পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দালালচক্রের কাছে দেন।
গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) ভূমধ্যসাগরে লিবিয়ার উপকুল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী নিয়ে ইটালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া ট্রলার ডুবিতে নিহত হন জাকির হোসেন। জাকির হোসেনকে হারিয়ে এখন দিশেহারা স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের লোকজন। স্বামীকে হারিয়ে কান্না যেন থামছেই না স্ত্রী শান্তা আক্তারের। অবুঝ দুটি কন্যা সন্তানকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা নেই পরিবারের লোকজনের। এদিকে সন্তান ট্রলার ডুবিতে নিহত হওয়াকে যেন বিশ্বাসই করতে পারছে না নিহত জাকিরের বাবা-মামা।
তার স্ত্রী শান্তা আক্তার কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, ‘এ পর্যন্ত ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বিভিন্ন সময়ে দালাল চক্র তাদের কাছ থেকে নিয়েছে ইতালি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। গত ৯ মে ট্রলারে উঠার আগে পরিবারের সঙ্গে একবার কথা হয়েছিল। এর পর আর যোগাযোগ নেই। অজানা শঙ্কায় বুকের ভেতরটা মুচড়ে উঠছে বার বার’ এলাকাবাসী জানান, দালালদের খপ্পরে পরে লিবিয়া হয়ে ইটালি যাওয়ার পথে ট্রলার ডুবিতে নিহত জাকির হোসেনের পরিবারকে শান্তনা দেওয়া ভাষা নেই। তবে দালালদের উপযুক্ত শান্তি দাবি করছি। যাতে আর কোন দালালচক্র এরকমভাবে ট্রলার পথে গ্রামের সহজ সরল যুবকদের নিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে না দেয়। এসমস্ত দালালদের চরম শাস্তি হউক।