।। মো. জসিম উদ্দিন।।
‘অপরাধী’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘গ্রামের নও জোয়ান’ ইত্যাদি সুরের মূর্ছনায় ঝাঁকঝমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে ফ্যামিলি নাইট। তিনপর্বে বিভক্ত এ অনুষ্ঠানে প্রথম সেশনে ফ্যামিলি ডে, দ্বিতীয় সেশনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র্যাফেল ড্র, অব্যাগত অতিথিদের নিয়ে আলোচনা সভা ও রাতের ডিনারের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো ফ্যামিলি নাইট অনুষ্ঠানমালা।
২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন (বিজিবি ৫২) ক্যাফের বিকালটি বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিক ও পরিবারের সদস্যদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল।
বিকাল সাড়ে ৩টায় ফ্যামিলি নাইট অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা থাকলেও প্রখর রোদের উত্তাপে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সাংবাদিক দম্পতিরা ঘর হতে বের হননি। পরবর্তীতে বিকাল সাড়ে ৫টায় মূল অনুষ্ঠানাদি শুরু হয়।
প্রথম পর্বে সাংবাদিক দম্পতিদের পরিচিতি পর্ব শেষে শুরু হয় ফটোসেশন। পড়ন্ত সূর্যের লাল আভা অস্তমিত হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চলে গ্রুপ ছবি কিংবা নিজ সহধর্মিনীর সাথে মজার মজার ফটোস্যুট।
বিয়ানীবাজারে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি ৫২ এর ভিতরে সাধারণের প্রবেশাধিকারে রয়েছে বেশ কড়াকড়ি। কিন্তু বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিকদের আবদার ফেলতে পারেননি লেফটেন্যান্ট কর্ণের মোঃ ফয়জুর রহমান। আর সেই সুবাদে সাংবাদিক ও সাংবাদিক দম্পতিরা তখন সদর দফতরের ভিতরে নিজের ইচ্ছেমতো ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় পার করেন। সূর্যের লাল আভা যখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে সেই মুহূর্তে শেষ হয়ে যায় ছবি তোলার কাজ। ইচ্ছেমতো ছবি তুলে সবাই পুনরায় ক্যাফে সীমান্তে ২য় পর্বের জন্য প্রস্তুত হয়।
মাথিউরা টি-গার্ডেন ও কক্সবাজার ট্যুরের ছবি সম্বলিত ব্যানারটি বলে দিল বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিকদের মিলনের সেতুবন্ধন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অব্যাগত অতিথিদের শুভেচ্ছা বক্তব্য ও কৌতুক পর্ব নিয়ে যাত্রা শুরু হয় ২য় পর্বের। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি শিশু শিল্পী প্রতিযোগীতায় বিভাগীয় সেরা শিল্পী বিয়ানীবাজারের ঐশী, সাংবাদিক ও সাংবাদিক পুত্র এ অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন।
গান পরিবেশন করেন সাংবাদিক আতাউর রহমান, সাংবাদিক আব্দুল ওয়াদুদ, সাংবাদিক মোঃ জসিম উদ্দিন, সাংবাদিক মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলামের বোন নিশি, সাংবাদিক শাহীন আলম হৃদয়ের পুত্র মাহদি আলম প্রিয়, স্থানীয় শিল্পী হাবিব আহমদ, শিল্পী রিপা কর, ঐশী।
সংগীতের পাশাপাশি সাংবাদিকদের সহধর্মিণী ও তাদের সন্তানদের জন্য ভিন্নধর্মী মিউজিক্যাল প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। মিউজিক্যাল প্রতিযোগীতায় প্রথম হন সাংবাদিক রুহেল আহমদের সহধর্মিনী ফাহিমা বেগম, ২য় হন মোঃ জসিম উদ্দিনের সহধর্মিনী ফাতেমা জোহরা ঝিমা, ৩য় হন সুয়াইবুর রহমান স্বপনের সহধর্মিনী তাহমিনা সীমা। সংগীত অনুষ্ঠান শেষে কৌতুক পরিবেশন করেন এনটিভি কৌতুক অভিনেতা বিয়ানীবাজারের সন্তান আবিদুল ইসলাম রিমন। এরই মধ্য দিয়ে শেষ হয় ফ্যামিলি নাইট অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব।
সংগীতের ফাঁকে ফাঁকে অব্যাগত অতিথিদের পরিচয় করিয়ে দেন ফ্যামিলি নাইট অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সাংবাদিক শাহীন আলম হৃদয় ও সুয়াইবুর রহমান স্বপন। অনুষ্ঠানে অব্যাগত অতিথিদের নিয়ে শুরু হয় শেষ পর্ব। এ পর্বে অব্যাগত অতিথিরা তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিকদের একাগ্রতার চিত্র।
এ সময় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন (বিজিবি ৫২) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোঃ ফয়জুর রহমান, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান, বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র মোঃ আব্দুস শুকুর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আরিফুর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জামাল হোসেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকসানা বেগম লিমা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি আব্দুল হাছিব মনিয়া, উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজমুল হোসেন পুতুল ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মোসলেহ উদ্দিন খান।
সাংবাদিকদের পক্ষে অনুভূতি প্রকাশ করেন বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মো. জয়নুল ইসলাম, বিয়ানীবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ছাদেক আহমদ আজাদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিক আহমদ ও কানাডা প্রবাসী দুলাল হক।
অনুষ্ঠানে বিমানের পাইলট হওয়ার গৌরব অর্জন করায় বিয়ানীবাজারের কৃতি সন্তান ইসতিয়াক উদ্দিন খান এবং আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক রিজু মোহাম্মদকে সংবর্ধিত করা হয়। এ সময় সংবর্ধিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ইসতিয়াক উদ্দিন খান ও রিজু মোহাম্মদ।
ফ্যামিলি নাইট অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আতাউর রহমান, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাষ্টার আব্দুর রহিম, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল ওয়াদুদ, প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি সজীব ভট্টাচার্য্য, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ জয়নুল ইসলাম ও সহধর্মিনী বুশরা ইসলাম, বিয়ানীবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ছাদেক আহমদ আজাদ ও সহধর্মিনী ফাহিমা ইয়াসমিন, বিয়ানীবাজার জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আহমেদ ফয়সল, বিয়ানীবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারন সম্পাদক শাহীন আলম হৃদয় ও সহধর্মিনী মারজিয়া আলম তৃষ্ণা, সাপ্তাহিক দিবালোক পত্রিকার সম্পাদক হাসান শাহরিয়ার ও সহধর্মিনী তাহেরা খানম, সাংবাদিক মুকিত মোহাম্মদ ও সহধর্মিনী সুমি আক্তার, সাপ্তাহিক সম্ভাবনা পত্রিকার সম্পাদক মাছুম আহমদ, সাংবাদিক সুয়াইবুর রহমান স্বপন ও সহধর্মিনী তাহমিনা সীমা, সাংবাদিক মোঃ জসিম উদ্দিন ও সহধর্মিনী ঝিমা বেগম, সাংবাদিক শিপার আহমদ পলাশ, সাংবাদিক সুফিয়ান আহমদ, সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ ও সহধর্মিনী বুশরা বেগম, সাংবাদিক ছামিয়ান আহমদ ও সহধর্মিনী সোহানা আক্তার সুমি, আবু তাহের রাজু, রুহেল আহমদ ও সহধর্মিনী ফাহিমা বেগম, জয়নুল ইসলাম, আহমদ রেজা, তাজবীর আহমদ, শহিদুল ইসলাম সাজু, আরিফ আহমদ ও সাহেদ আহমদ।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। র্যাফেল ড্র বিজয়ী ৭ জন সৌভাগ্যবানের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ ও মিউজিক্যাল প্রতিযোগীতার অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এরই ফাঁকে স্থানীয় ৮জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক দম্পতিকে ফ্যামিলি নাইট স্মৃতি স্মারক প্রদান করা হয়। তারা প্রত্যেকেই অতিথিদের কাছ থেকে স্মারকটি সানন্দে গ্রহণ করেন।
গড়ির কাটায় যখন রাত সাড়ে ১০টা তখন কথায় কথায় রঙের ফানুস উড়ানো ফ্যামিলি নাইটের আনন্দযজ্ঞ প্রাণ হারিয়ে ফেলে।
তখনই আমন্ত্রিত অতিথি ও সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রাতের ডিনার (কাচ্চি বিরিয়ানি) পরিবেশনের মাধ্যমে সাঙ্গ হয় ‘ফ্যামিলি নাইট’।
ফ্যামিলি নাইটের লাইভ সম্প্রচারের কিছু মুহূর্ত
বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিকদের ফ্যামিলি নাইট…
Posted by Beanibazarbarta24.com on Thursday, April 25, 2019