বিয়ানীবাজারবার্তা২৪.কম ডেস্ক।।।
দুই ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আক্কাস আলীকে কাম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে জানুয়ারি-জুন ২০১৯ ও জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত মোট ৮ সেমিস্টারের জন্য একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নূর উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানা গেছে।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ আনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা বোর্ড এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শেষ বর্ষের দুই ছাত্রী দেড় মাস আগে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে মো. আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। চলতি মাসের শুরুতে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি আইডি থেকে ওই দুই ছাত্রীর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রকাশ করা হয়। পরে সেটি ভাইরাল হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
গত ৭ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে ওই শিক্ষকের বহিস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নাসির উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশসনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে ওই শিক্ষককে চেয়ারম্যানের পদ থেকে বহিস্কার করেন। পাশাপাশি তাকে সাময়িক ভাবে প্রশাসনিক ও একাডেমিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. আব্দুর রহিম খানকে সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. মো. বশির উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ঈশিকা রায় ও এসিসিই বিভাগের সভাপতি ড. মো. কামরুজ্জামান।
পরের দিন থেকে টানা ৭ দিন সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের স্থায়ী চাকরি চ্যুতির দাবিতে সিএসই বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এছাড়া ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে।
পরে তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা বোর্ডের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শৃংখলা বোর্ড অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শৃংখলা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, তদন্ত প্রতিবেদন গোপনীয় একটি বিষয়।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিবেচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর নির্ভর করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সময়ে ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরো বেতন ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন। কিন্তু তাকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কোন কাজ করতে হবে না।