গোলাপগঞ্জ: গোলাপগঞ্জ উপজেলার নবনির্বাচিত পরিষদ তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (আজ) আনুষ্ঠানিকভাবে নব পরিষদকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন পুরাতন পরিষদ। দায়িত্ব গ্রহণ করেই দিনভর তারা অফিস করেন।
নতুনদের দায়িত্বগ্রহণ ও পুরাতন পরিষদের বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী,ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শীলা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম, পৌর মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, থানা অফিসার ইনচার্জ একেএম ফজলুল হক শিবলীসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার, আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দায়িত্বগ্রহণ শেষে নতুন পরিষদ নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম মাসিক সাধারণ সভা।
নবনির্বাচিত পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শীলা দায়িত্বভার গ্রহণ কালে সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও বিদায়ী দুই ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন অনুপস্থিত। তবে তারা দু’জন অনুপস্থিত থাকলেও দায়িত্বভার গ্রহণ করায় মোবাইল ফোন করে নব পরিষদকে অভিনন্দন জানান।
দায়িত্ব পেয়েই নিজ নিজ অফিসে প্রথম কার্য শুরু করলে উপজেলা প্রশাসন, পৌর মেয়র, থানা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের অভিনন্দন জানান।
নতুন এ পরিষদের পুরো প্যানেলই ক্ষমতাসীস আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনজনই দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি গোলাপগঞ্জ তথা সিলেটের বর্ষিয়ান একজন রাজনীতিবিদ। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন ইকবাল আহমদ চৌধুরী।
ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকাদক্ষিণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এজিএসও ছিলেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শীলা সিলেট মহানগর যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী। ইতিপূর্বে ২০০৯ সালে আরো একবার তিনি ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পুরাতন হলেও একেবারেই নতুন ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ। এবারই তিনি প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে দ্বিতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও পুরো পরিষদই ছিলো আওয়ামীলীগ ঘরোনার। এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী ও নাজিরা বেগম শীলার সঙ্গী হিসেবে সেসময় ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন ইসলাম কামাল। ২০১৪ সালে তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ইকবাল আহমদ চৌধুরীর সাথে হুমায়ূন ইসলাম কামালও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একই ঘরোনার দু’জন হওয়ায় এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফিজ নজমুল ইসলাম।
সর্বশেষ গত ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে পুরাতন পরিষদের তিনজনের মধ্যে কেউই প্রতিদ্বন্দিতা করেননি। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী দলীয় প্রতিক নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী এডভোকেট মাওলানা রশীদ আহমদ ও ইসলামী ঐক্যজোটের জহির উদ্দিনকে পরাজিত করেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে বই প্রতিক নিয়ে মনসুর আহমদ তার অপর প্রতিদ্বন্দ্বি সাংবাদিক আব্দুল আহাদ, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিপন ও ছাত্রলীগ নেতা শাহিন আহমদকে পরাজিত করে বিজয়ী হন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজিরা বেগম শীলা ফুটবল প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাছুমা বেগম ও নার্গিস আক্তারকে পরাজিত করে বিজয়ী হন।