Sunday, 2 April, 2023 খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ |




নুসরাত হত্যা মামলা : অভিযুক্ত অধ্যক্ষের এমপিও স্থগিত

ঢাকা: সপ্তাহ খানেক আগেও নুসরাত জাহান ছিলেন পৌর এলাকার স্কুল-মাদ্রাসাগামী আর দশটি সাধারণ মেয়ের মতন একজন। তবে শিক্ষকের দ্বারা শ্লীলতাহানির অভিযোগ এবং মাদ্রাসার ভেতরে তার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ইতোমধ্যে নড়ে-চড়ে বসেছে দেশের প্রশাসনসহ সুশীল সমাজ।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নির্যাতন ও পুড়িয়ে হত্যার মামলায় প্রথমে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ-দৌলা এবং পরে পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম ও তার সহযোগী জাবেদাসহ মোট ৫ জনকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে এরইমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পরবর্তীতে মাদ্রাসার অভিযুক্ত সেই অধ্যক্ষ এবং এক শিক্ষকের এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

তার এ আদেশটি ইতোমধ্যে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়, ‘মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানি (মামলা নম্বর-২৪, তারিখ- ২৭/০৩/২০১৯) ও পুড়িয়ে হত্যা ( মামলা নম্বর- ১০, তারিখ- ০৮/০৪/২০১৯) মামলায় গ্রেফতার হওয়া সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ-দৌলা ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফসার উদ্দিনের এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) স্থগিতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ কর হলো।’

এর আগে গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি। এ সময় তাকে কৌশলে প্রতিষ্ঠানের ছাদে নিয়ে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে দীর্ঘ পাঁচ দিন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের ব্রান এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন থেকে বুধবার (১০ এপ্রিল) রাতে মৃত্যু বরণ করেন তিনি।

যদিও মৃত্যুর আগে দীর্ঘ সময় লাইফ সাপোর্টে ছিলেন মাদ্রাসাছাত্রী। এদিকে গত ২৭ মার্চ সেই শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা।

এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার নিজে বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সে দিনই অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা আটক করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। যদিও পরবর্তীতে এ মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দিতে থাকে অধ্যক্ষের লোকজন।

এরই এক পর্যায়ে গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সমর্থনকারী দুর্বৃত্তরা।

 

Developed by :