কমলগঞ্জ: মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলাসহ কমলগঞ্জে আগাম বৃষ্টিপাতে চা বাগানগুলো চায়ের ফলন দ্বিগুন হওয়ার সম্ভবনা বেশি। চা-বাগানে এবারের প্রথম বৃষ্টিতে চা গাছে গজাচ্ছে নতুন কুঁড়ি পাতা। এ কারণে উপজেলার ২৩ টি চা বাগানে চায়ের ফলন দ্বিগুন মাত্রায় বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন বাগান কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে দেখা যায়, নারী চা শ্রমিকরা কচি চায়ের কুঁড়ি চা পাতা উত্তোলনের জন্য সকাল থেকেই দল বেঁধে চা বাগানের বিভিন্ন টিলায় ঝাঁপিয়ে পড়ছেন।
বাগান সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী দিনগুলো আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল চায়ের চাহিদা এবং দাম সারা দেশে ও বিদেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাগান কর্তৃপক্ষ নতুন বাগান সৃজনের পাশাপাশি কারখানার পরিধিও বৃদ্ধি করছেন।
পাত্রখোলা চা বাগানের ম্যানেজার শফিকুর রহমান মুন্না জানান, এ সময় পূর্বের বছর চায়ের গাছে পানি সরবরাহের জন্য গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানির উৎস তৈরি করে পানির পাম্পের পাইপ দিয়ে চায়ের গাছে গুড়ায় পানি দিতে বাগান কর্তৃপক্ষ নানা হিমশিম পোহাতে হতো। এতে ব্যয় হতো প্রচুর টাকা।
কিন্তু এবার আগাম বৃষ্টির কারনে পানি সরবরাহের বেগ পেতে হয়নি বলে তিনি জানান। তাই বৃষ্টির ফলে চা বাগানে নতুন কুঁড়ির অভাবনীয় সাফল্য দেখা দিয়েছে।
ফলে এ বাগানের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে চায়ের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে চায়ের গুণগত মানসহ চা চাষের পরিধি বৃদ্ধিও জন্য পতিত এলাকায় নতুন চারা গাছ রোপণের কাজ চলছে। এই বৃষ্টি বাগানের জন্য অনেক উপকারী ও দ্বিগুন ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।
বাগান সূত্রে জানা যায়, গত বছর বৃষ্টিপাত দেরিতে হওয়ায় আবহাওয়া জনিত কারণে সিলেটে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ১০ ভাগ কম হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বেশি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন চা শ্রমিকরা। চৈত্র মাসের মেঘের আগমন ঘটায় এবার ভাগ্য প্রসন্ন বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষরা।
চা শ্রমিক নেতা ইউপি সদস্য সীতারাম বীন বলেন, চায়ের দ্বিগুন ফলন হলেও চা শ্রমিকরা বঞ্চিত থাকে সব সময়। তবে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধিও জন্য শুভ লক্ষণ দেখছেন চা-বাগান মালিকরা।
এ বিষয়ে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, বৃষ্টির পরশে চা-গাছ আগে-ভাগে কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করছে। গত কদিন থেকে থেমে থেমে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টি চা বাগানের জন্য খুবই উপকারী হবে বলে তিনি মনে করছেন।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই) এর পরিচালক ড. মাঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই বৃষ্টি চায়ের জন্য উপকারী। এর ফলে চা গাছের গ্রোধ বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি চা গাছে দ্রুত ফ্লাশ দেখা দেবে। এমন বৃষ্টিতে সেচ কম লাগবে এবং চায়ের উৎপাদন কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সহজ হবে।